হোম > সারা দেশ > কুষ্টিয়া

পানি কমছে পদ্মায়, ভাঙন আতঙ্কে দৌলতপুরের মানুষ

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি 

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের পদ্মা নদীতে পানি কমাতে শুরু করেছে। এতে দেখা দিয়েছে ভাঙন। এরই মধ্যে কিছু ঘরবাড়ি নদীর পেটে গেছে। তবে এখনো নদী ভরা থাকায় ভাঙন তীব্র হয়নি। পানি আরও কমলে ভাঙন বাড়ার আশঙ্কা করছেন পদ্মাপাড়ের মানুষ। আতঙ্কে অনেকেই ঘরবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন। 

এদিকে নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় উপজেলার কয়েক হাজার ঘরবাড়ি এখনো পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। তলিয়ে আছে ফসলের খেত। 

চিলমারীর ইউনিয়নের সীমান্তঘেঁষা গ্রাম উদয়নগর বেশ কয়েক বছর ধরেই ভাঙনের কবলে পড়ে হারিয়েছে আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার, শত শত একর আবাদি জমি ও ঘরবাড়ি। ভেঙেছে সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা। এখন ভাঙন থেকে মাত্র ২৫ থেকে ৩০ মিটার দূরে আছে একটি বিজিবি ক্যাম্প। 

ইতিমধ্যে ভাঙনের কবলে পড়েছে উদয়নগর বিজিবি ক্যাম্পের পাশে থাকা আতারপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এ ছাড়া রয়েছে দোকানপাট, হাটবাজার, মসজিদসহ নানা স্থাপনা। সরজমিনে দেখা যায়, আর ৫০ মিটারের মতো নদী ভাঙলে এই অংশে থাকা আরও দুটি আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে। এ ছাড়া ভাঙন দেখা দিয়েছে ইউনিয়নটির মানিকের চরের পশ্চিম পাশে। 

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা হারুনুর রশীদের সঙ্গে। তিনি জানান, জীবনে পাঁচবার তিনি নদীভাঙনের কবলে পড়েছেন। এলাকার নিরাপত্তা নিশ্চিতে থাকা বিজিবি ক্যাম্পটিও হুমকির মুখে পড়েছে বলে দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি, এটা একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভাঙনের কারণে আজ সেটিও হারাতে বসেছি।’ 

কথা হয় খারিজাথাক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী বৈশাখী খাতুনের সঙ্গে। কাছাকাছি থাকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো ভেঙে যাওয়ায় দূরের স্কুলে যেতে হয় তাকে। কখনো পায়ে হেঁটে, কখনো নৌকায় যাতায়াত করতে হয়। খরচ বেশি হওয়ায় ঠিকমতো উপস্থিত হতে পারে না সে। নদীর পানিতে তাদের গ্রাম পানিবন্দী হয়ে পড়ায় আশ্রয় নিয়েছে উঁচু এলাকায় থাকা আত্মীয়ের বাড়িতে। তসলিমা খাতুন নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘তিন মেয়ে নিয়ে থাকি। পানিবন্দী হয়ে পড়ায় সাপ ও কীটপতঙ্গের ভয়ে মেয়েদের বাড়িতে রাখি না। গবাদিপশু দেখাশোনা করার জন্য বাড়িতে একাই থাকি।’ 

স্থানীয় চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, ‘নদীতে পানি কিছুটা কমেছে। তা ছাড়া উদয়নগর ও মানিকের চরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি কমার সঙ্গে এর তীব্রতা বাড়তে পারে।’

কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আব্দুল হামিদ বলেন, ‘ভাঙন রোধে আমরা কাজ করছি। খুব দ্রুত উদয়নগর ও মরিচার হাটখোলাপাড়া এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ের কাগজপত্র জমা দেব।’এদিকে নদীর পানি কমার বিষয়ে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, ‘শুক্রবার থেকে নদীতে পানি কমতে শুরু করেছে। গত বৃহস্পতিবার পদ্মার হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সর্বোচ্চ পানির প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার। আজ সোমবার বেলা ৩টার সময় তা কমে হয়েছে ১২ দশমিক ০৭ সেন্টিমিটার। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। নদীতে এখন পানি কমতে থাকবে। তবে এক-দুই দিন ১ সেন্টিমিটার করে বাড়বে, তারপর আবার কমতে থাকবে। 

কুষ্টিয়া বিজিবির ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, ‘উদয়নগর বিওপি থেকে আর ২৫ থেকে ৩০ মিটার দূরে নদীর অবস্থান। ইতিমধ্যে স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় ২৫ হাজার জিও ব্যাগ ফেলেছি। চেষ্টা করছি সরকারি এই স্থাপনাসহ এখানে বসবাস করা ২ থেকে ৩ হাজার মানুষের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করার।’

কুষ্টিয়ায় পিকআপচাপায় দুই কিশোর নিহত

দৌলতপুর সীমান্তে ভারতীয় নাগরিক পুশ ইনের চেষ্টা: ব্যর্থ হয়ে ১৪ জনকে ফেরত নিল বিএসএফ

দৌলতপুরে সূর্যের দেখা নেই, বাড়ছে শীতের তীব্রতা

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর: গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি

কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসে আগুন, পুড়েছে নথিপত্র

দৌলতপুরে গ্রাম আদালতে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

কুষ্টিয়ায় প্রথম আলো অফিসে হামলা ও ভাঙচুর

কুষ্টিয়ায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ৫

রসুনের খেতে মুরগি যাওয়ায় মারামারি, বল্লমের আঘাতে যুবক খুন

কুষ্টিয়ায় কাভার্ড ভ্যানচাপায় ২ পুলিশ কর্মকর্তা নিহত