হোম > সারা দেশ > কুড়িগ্রাম

‘আলুর দাম বেশি, কেনার ট্যাকা নাই বাবা’ 

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম শহরের জিয়া বাজারে আজ শুক্রবার বিকেলে দেখা মেলে মধ্যবয়সী নারী জোবেদার সঙ্গে। হাতে একটি পলিথিনে সবজি নিয়েছেন। তাতে কয়েকটি করলা আর বেগুন। আলুর প্রশ্নে জোবেদা বলেন, ‘আলু দাম বেশি, কেনার ট্যাকা নাই বাবা। কয়টা পচা করলা কিনচোং’। 

বাজারের ব্যাগসহ জোবেদার ছবি নিতে চাইলে তাতে সম্মতি দেননি জোবেদা। তিনি জানান, অন্যের বাড়িতে কাজ করে তার জীবিকা চলতো। কিন্তু স্ট্রোকে অসুস্থ হওয়ার পর থেকে আর কাজ করতে পারেন না। এখন আর্থিক সংকটে অভাব আর অনটনে দিন কাটে শহরের খলিফা মোড় এলাকার বাসিন্দা এই নারীর। 

শুধু জোবেদা নন। সাধারণ মানুষের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকার অনিবার্য পণ্য আলু এখন অনেক দিনমজুর ও দরিদ্র মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে দাম বেঁধে দিলেও সেই দামে মিলছে না এই সবজি। 

শহরের মুন্সিপাড়ার বাসিন্দা রানা বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্যের যে ভাবে দাম বাড়ছে তাতে আমাদের জীবন ধারণ খুব কষ্ট হয়ে গেছে। এখন ভালো মানের খাবার কিনতে পারি না। আলু কিনেছি নিম্নমানের, যেগুলো পচা মিশ্রিত। একটু কম দাম হওয়ায় বাধ্য হয়ে এসব কিনতে হচ্ছে।’

আজ শুক্রবার কুড়িগ্রাম শহরের জিয়া বাজারে আলু ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার্ডিনাল জাতের আলুর পাইকারি মূল্য প্রতি ৫ কেজি ১৭০ থেকে ১৯০ টাকা এবং পাকড়ী/রোমানা জাতের আলু প্রতি ৫ কেজি ২৭০ টাকা বিক্রি হয়েছে। ভোক্তা পর্যায়ে এসব আলু বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ৪০ টাকা ও ৬০ টাকা কেজি। 

আলু ব্যবসায়ী একরামুল বলেন, ‘বাজারে আলুর সংকট। কেন সংকট তা আমরা জানি না। সংকটের কারণে দামও বেশি। সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে এতো দাম হইতো না।’ 

ব্যবসায়ীরা আলুর সংকট বললেও জেলার হিমাগারগুলোর চিত্র ভিন্ন। জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের তথ্য মতে, কুড়িগ্রাম জেলায় প্রতি মাসে প্রায় ৩ থেকে ৪ হাজার মেট্রিকটন আলুর চাহিদা রয়েছে। দপ্তরের ১৯ সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদন অনুযায়ী জেলার চারটি হিমাগারে এখনও প্রায় ১৬ হাজার মেট্রিকটন আলু মজুদ রয়েছে। অনেক ব্যবসায়ীর হাজার হাজার বস্তা আলু হিমাগারে সংরক্ষিত থাকলেও অধিক মুনাফার আশায় তারা বাজারজাত করছেন না। 

কুড়িগ্রাম সদরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের আলু চাষি কাজল বলেন, ‘উৎপাদন, পরিবহন ও হিমাগার খরচ মিলে প্রতি কেজি আলু ২৪ টাকা বিক্রি করলেও চাষিদের লাভ থাকবে। তারপরও কেন আলুর দাম এভাবে বাড়ছে তা আমরাও বুঝতে পারছি না। সিন্ডিকেটটা কোথায় সেটা সরকারের খুঁজে বের করা উচিৎ।’ 

জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা শাহীন আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কুড়িগ্রামে উৎপাদিত আলু জেলার বাইরে চলে যায়। বাইরের জেলাগুলোয় দাম বেশি হওয়ায় কুড়িগ্রামের স্থানীয় আলু ব্যবসায়ীরা আরও দাম বাড়ার প্রত্যাশা করছেন। ফলে তারা হিমাগার থেকে আলু বের করা কমিয়ে দিয়েছেন। এর প্রভাব স্থানীয় বাজারে পড়ছে।’ 

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং শুরু করেছি। হিমাগারগুলো থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যারা বেশি পরিমাণে আলু সংরক্ষণ করেও হিমাগার থেকে তুলছেন না তাদেরকে আলু বাজারজাত করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’

মাদ্রাসার পরিচালককে হত্যার হুমকির চিরকুট, থানায় জিডি

সুদান হামলা: সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো শান্তিরক্ষী শান্তকে

সুদানে হামলা: শোকে বিহ্বল শান্ত ও মমিনুলের পরিবার, লাশের জন্য অপেক্ষা

পাঁচ দফা দাবিতে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

রোজার আগেই নির্বাচন হতে হবে, যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা বাড়বে: মান্না

কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

উলিপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

১৬ শতক জমির বিরোধে ঝরল ভাই-বোনসহ তিনজনের প্রাণ

কুড়িগ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৩