কুড়িগ্রামের রৌমারীতে বন্য হাতি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। ভারত সীমান্ত পেরিয়ে আসা তিনটি বন্য হাতি ফসলের খেতে হানা দেয় বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, আগুন জ্বালিয়ে ও পটকা ফাটিয়ে হাতি তাড়ানোর চেষ্টা করেন তাঁরা।
আজ সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে ঘুরে জানা যায়, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো পাহাড় থেকে নেমে আসে এই তিনটি বন্য হাতি। গত শনিবার রাত ৯টার দিকে রৌমারী সীমান্তের আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ১০৭১ এর কাছে আলগারচর এলাকা দিয়ে এসব বন্য হাতি লোকালয়ে ঢুকে। শনিবার রাত ৯ টা থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত এসব হাতি উপজেলার আলগারচর, খেওয়ারচর, বকবান্ধা, ঝাউবাড়ী, পাটাধোয়াপাড়া, কলাবাড়ী, বারবান্ধা, চুলিয়ারচর, বড়াইবাড়ী, পূর্ব দুবলাবাড়ী এ ১০ গ্রামের বোরো খেতে তাণ্ডব চালায়।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জমির বোরো ধান খেয়ে ফেলা ছাড়াও তছনছ করে হাতিরা। পরে গতকাল সোমবার ভোরেই সীমানা পিলার ১০৭১ এর কাছ দিয়ে ভারতে চলে যায় এসব হাতি। তবে এখনো আতঙ্ক কাটেনি সীমান্তবর্তী এলাকার কৃষকদের। প্রতি বছরে কয়েকবার বন্য হাতি বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে ফসলসহ ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি করে। ভারত থেকে আসা এসব বন্য হাতি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যেন না ঢুকতে পারে সেজন্য সংশ্লিষ্টদের কাছে দাবি জানান সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষেরা।
ঝাউবাড়ী গ্রামের গোলাম হোসেন জানান, তাঁর ২০ শতক জমির বোরো ধান খেয়ে ফেলাসহ নষ্ট করেছে হাতি। এ ছাড়াও সরবেশ আলীর ১৫ শতক জমির ধান, সোহান আলীর ১২ শতক, ইউনুছ আলীর ২০ শতক, কলাবাড়ী গ্রামের মোবারক হোসেনের ২১ শতক, আব্দুল কাদেরের ১৩ শতক, বারবান্ধা গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ১০ শতক জমির ধান ও চুলিয়ারচর গ্রামের নজরুল ইসলামের ৩০ শতক জমির ধানসহ শতাধিক কৃষকের বোরো ধান নষ্ট করেছে বন্য হাতি।
রৌমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, শনিবার রাত থেকে সোমবার ভোর পর্যন্ত ভারতীয় বন্য হাতির আক্রমণে বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। প্রতিবছর এ মৌসুমেই বন্য হাতি এভাবে ফসলের ক্ষতি করে আসছে। তিনি জানান, দু’দিনে মোট ৫ দশমিক ১ হেক্টর জমির বোরো ধান ক্ষতি করেছে ভারতীয় বন্য হাতি।
চিলমারী উপজেলা সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ জেড ইকবাল হোসেন খানের মোবাইলে এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এবিএম সরোয়ার রাব্বী বলেন, এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষে কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে এবং ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।