হোম > সারা দেশ > কুড়িগ্রাম

নৌকাডুবির পর স্ত্রী-সন্তানকে আঁকড়ে ধরে কূলে এসে আজিজুল দেখেন, মেয়ে আর নেই

উলিপুর (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

তিস্তা নদীতে হঠাৎ দমকা হাওয়ার কবলে পড়ে যাত্রীবাহী নৌকা। এ সময় একহাতে স্ত্রী ও অপর হাতে শিশু সন্তানকে আঁকড়ে ধরে তীরে ফেরেন আজিজুল হক। স্রোতের বিপরীতে লড়াই করে তীরে পৌঁছে তিনি দেখেন, স্ত্রী চায়না বেগম (২৪) জীবিত থাকলেও শিশু সন্তান আয়শা সিদ্দিকা (১৩ মাস) তাঁর হাতেই হয়ে পড়েছে নিথর। 

গতকাল বুধবার (১৯ জুন) সন্ধ্যায় তিস্তা নদীবেষ্টিত কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের খামার দামারহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঝের চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। অপরদিকে নৌকাডুবির ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিখোঁজ থাকায় বাড়িতে স্বজনদের চলছে শোকের মাতম। 

আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। জানা গেছে, নৌকা ডুবির ঘটনায় একই পরিবারের চারজন নিখোঁজ হয়েছেন। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে সরেজমিন উপজেলার বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরায় দেখা যায়, আনিচা বেগম (৬০) বাড়িতে বিলাপ করছেন। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘নৌকাডুবিতে আমার সব শেষ হয়ে গেছে।’ তাঁর ছেলে আনিছুর রহমান (২৮), পুত্রবধূ রুপালী বেগম (২৩), নাতনী আইরিন (৯) ও ইরা মণি (১০) ও একই এলাকার কয়জাল হকের শিশু সন্তান কুলসুম (আড়াই বছর) নিখোঁজ রয়েছেন। নিখোঁজদের ফিরে পাওয়ার জন্য স্বজনেরা নদীতীরে অপেক্ষা করছেন। 

শিশু সন্তানকে আঁকড়ে ধরেও বাঁচাতে না পারা আজিজুল হক (৩০) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নৌকা ডুবে যাওয়ার পর তিনি ভেসে উঠে দেখতে পান তাঁর শিশু সন্তান আয়শা ভেসে আছে। এ সময় তিনি এক হাত দিয়ে তাকে ধরেন। একই সময় স্ত্রী চায়না বেগম ভেসে উঠলে তিনি তাঁকেও ধরেন। এরপর খুব কষ্ট করে স্রোতের বিপরীতে দুজনকে দুই হাতে ধরে নদীতীরে আসেন। স্থানীয়দের সহায়তায় ওপরে উঠে দেখেন স্ত্রী বেঁচে থাকলেও তাঁর হাতে থাকা শিশু সন্তানের দেহে প্রাণ নেই। তাঁর অপর শিশু শামীম (৫) নিখোঁজ রয়েছেন। 

এলাকাবাসী ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, বজরা ইউনিয়নের পশ্চিম বজরা খেয়াঘাট এলাকা থেকে জয়নাল আবেদীনের পরিবার ও তাদের আত্মীয়স্বজন মিলে বুধবার সন্ধ্যার দিকে ২৫ জন ব্যক্তি একটি নৌকায় ওঠেন। তাঁরা নৌকাযোগে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পাওটানা গাবরের চর এলাকায় জয়নাল আবেদীনের মেয়ের শ্বশুর বাড়িতে ঈদ পরবর্তী দাওয়াতে যাচ্ছিলেন। নৌকাটি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কিছু সময় পর মাঝনদীতে হঠাৎ দমকা হাওয়ার কবলে পড়েন। এ সময় তিস্তার প্রবল স্রোতে নৌকাটি উলটে গিয়ে ডুবে যায়। নদীতে সাঁতার কেটে ৮ জন তীরে উঠতে পারলেও বাকিরা ডুবে যান। পরে স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতার জন্য এগিয়ে আসেন। খবর পেয়ে উলিপুর ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে উদ্ধার কাজে নামেন। এ সময় নদী থেকে আরও ১০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। 

উদ্ধার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া কুড়িগ্রাম ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে নিয়ে তাদের দেখানো বিভিন্ন জায়গায় ডুবুরি দল অভিযান পরিচালনা করছেন। আমরা প্রাণপণ চেষ্টা করছি কিন্তু এখন পর্যন্ত (সন্ধ্যা) নিখোঁজ ৬ জনের কোনো সন্ধান মেলেনি।’

সুদান হামলা: সন্তান ভূমিষ্ঠের আগেই পৃথিবী ছেড়ে যেতে হলো শান্তিরক্ষী শান্তকে

সুদানে হামলা: শোকে বিহ্বল শান্ত ও মমিনুলের পরিবার, লাশের জন্য অপেক্ষা

পাঁচ দফা দাবিতে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীদের অবস্থান

পানিতে ডুবে প্রাণ গেল মামা-ভাগনের

রোজার আগেই নির্বাচন হতে হবে, যত বিলম্ব হবে তত শঙ্কা বাড়বে: মান্না

কুড়িগ্রামে ছাত্রাবাস থেকে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার

উলিপুরে পুকুরের পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু

১৬ শতক জমির বিরোধে ঝরল ভাই-বোনসহ তিনজনের প্রাণ

কুড়িগ্রামে দুই পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ নিহত ৩

ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের গাড়িচালকের মরদেহ উদ্ধার