কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্স থেকে ৩ মাস ২০ দিনে মিলেছে সাড়ে তিন কোটিরও বেশি টাকা। এ ছাড়া পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বৈদেশিক মুদ্রা।
আজ শনিবার সকালে মসজিদের ৮টি দান বাক্স খুলে বের করা হয় সাড়ে ১৬ বস্তা টাকা। দিনভর গণনা শেষে টাকার পরিমাণ দাঁড়ায় ৩ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৪১৫ টাকা। এ ছাড়া প্রচুর পরিমাণ স্বর্ণালংকার এবং বৈদেশিক মুদ্রা পাওয়া যায়।
আগে এসব অর্থ জেলার অন্যান্য মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানার উন্নয়নসহ গরিব মেধাবী ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হলেও এবার পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের কমপ্লেক্স বানানোর কাজে এসব টাকা ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এর আগে চলতি বছর মার্চ মাসের ১২ তারিখে এই আটটি দান বাক্সে পাওয়া গিয়েছিল ৩ কোটি ৭৮ লাখ ৫৩ হাজার ২৯৫ টাকাসহ বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রা।
পাগলা মসজিদে দান করতে আসা কয়েকজন জানান, এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগবালাই দূর হওয়াসহ বিভিন্ন মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব ধর্মের মানুষ প্রতিনিয়ত মানতের নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, ছাগল, হাঁস, মুরগিসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন।
পাগলা মসজিদের সেক্রেটারি কিশোরগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মাহমুদ পারভেজ জানান, ব্যাংকে রাখা টাকার লাভের অংশ দরিদ্র জটিল রোগীদের চিকিৎসা খাতে ব্যয় করা হয়।
মসজিদের সভাপতি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলম জানান, দেশের অন্যতম আয়কারী ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হিসেবে স্বীকৃত এ পাগলা মসজিদকে আন্তর্জাতিক মানের দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স নির্মাণ করার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। অচিরেই এর দৃশ্যত কাজ শুরু হবে
জনশ্রুতি রয়েছে, প্রায় আড়াই শ বছর আগে পাগলবেশী এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে বর্তমান মসজিদ এলাকা জেলা শহরের হারুয়ায় থামেন। তাঁকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্তকুল সমবেত হন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে এই মসজিদটি গড়ে ওঠে। পরে কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে।