কিশোরগঞ্জের ভৈরব স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেডে ভর্তি আট বছর বয়সী শিশু রবিন। আহত অবস্থায় হাসপাতালের বাইরে শুয়ে ছিল। স্বেচ্ছাসেবী এক তরুণী তাকে ভর্তি করে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রেখেছেন। গতকাল ভৈরবে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত এই শিশুটির এখনো পরিচয় মেলেনি।
আজ মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতালের বেডে শুয়ে ঘুমাচ্ছে শিশু রবিন। তার হাতে, পায়ে, শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরুতর জখম। একজন স্বেচ্ছাসেবী সেবিকা দেখভাল করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ও উপজেলা প্রশাসন সার্বিক দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে।
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ গতকাল রাতে ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত চারজন হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন শুধু শিশু রবিনই এই হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
হাসপাতালে রবিনের দেখাশোনা করছেন স্থানীয় জান্নাত আক্তার নামের এক তরুণী। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খুব খারাপ অবস্থায় সে হাসপাতালের বাইরে শুয়ে ছিল। সেখান থেকে তাকে ওয়ার্ডে নিয়ে আসি। তারপর থেকে চিকিৎসাসেবাসহ সব বিষয়ে দেখাশোনা করছি। পরিচয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত তার পাশে আছি। তবে সে তার পরিচয় জিজ্ঞেস করলে একেক সময় একেক কথা বলছে।’
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত নার্স কল্পনা বানু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মুখে আঘাত পেয়ে ঠোঁটের ওপরের মাড়ি ফেটে গেছে শিশুটির। দুটি সেলাই লেগেছে সেখানে। এ ছাড়া দাঁতেও হালকা আঘাত আছে। পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা প্রদান করা হচ্ছে। শিশুটি একজন মেয়ের তত্ত্বাবধানে আছে।’
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. বুলবুল আহমেদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আহত রবিনকে হাসপাতালে আনার পর থেকে চিকিৎসকের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। এখন পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। উপজেলা প্রশাসন এ নিয়ে কাজ করছে।’
গতকাল সোমবার কিশোরগঞ্জের ভৈরবে এগারসিন্দুর ট্রেনের সঙ্গে কনটেইনারবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে ১৭ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ১৩ জনের মৃত্যু হয়। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে শতাধিক। ঢাকা, ভৈরব, নরসিংদীসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে আহতরা।