যশোরের বেনাপোল সীমান্তে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে এক হলো দুই বাংলা। প্রতিবছরের মতো এবারও দুই বাংলায় নানান আয়োজনে দিবসটি পালিত হয়।
আজ মঙ্গলবার ২১ ফেব্রুয়ারি বেলা সাড়ে ১১টায় সীমান্তের শূন্যরেখায় বাংলাদেশ ও ভারতের শতাধিক ভাষাপ্রেমী কাঠ ও বাঁশের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানান। এ সময় দুই দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশের পক্ষে প্রধান অতিথি স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্যে নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন। অন্যদিকে ভারতের পক্ষে ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিত দাসের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি। এ সময় শূন্যরেখায় দুই বাংলার মানুষের উপস্থিতিতে মিলনমেলায় রূপ নেয়।
সালাম, বরকত তোমাদের ভুলি নাই, বাংলা ভাষা অমর হোক—এ স্লোগানে শূন্যরেখা প্রকম্পিত হয়। শ্রদ্ধায় ফুলে ফুলে ভরে ওঠে শহীদ মিনার। নেই বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কড়া নজরদারি।
ভাষা দিবস স্মরণীয় করতে দুই দেশের তরুণেরা করেছেন রক্তের বিনিময়। এদিকে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বিভিন্ন সংস্থার নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ছিল সীমান্তে।
২০০২ সালে প্রথম বেনাপোলের সরগম সংগীত একাডেমি ও ভারতের চব্বিশ পরগনার ২১ উদ্যাপন কমিটির আয়োজনে যৌথ মাতৃভাষা দিবস পালন শুরু হয় শূন্যরেখায়। আর ২০১২ সাল থেকে সরকারিভাবে দিবসটি পালন করছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বঁনগা পৌরসভা।
কলকাতা থেকে ভাষার টানে সীমান্তে আসা অরুন মন্ডল বলেন, ‘২০০২ সাল থেকে ২১ উৎসব আয়োজনে সীমান্তে আসি। তবে ভাষাকে রক্ষা করা জরুরি হয়ে পড়েছে। নতুন প্রজন্ম শুদ্ধ বাংলা ভাষা উচ্চারণ ভুলে যাচ্ছে।’
ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিধায়ক শ্রী বিশ্বজিত দাস বলেন, ভাষার জন্য প্রাণ দিয়েছে, সে ইতিহাস একমাত্র বাঙালির রয়েছে। এদিনে দুই বাংলা ভেদাভেদ ভুলে এক হয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য বলেন, যে আন্দোলনের মধ্যে সালাম, বরকতেরা জীবন দিয়ে মায়ের ভাষাকে রক্ষা করেছেন, সেই ইতিহাস পৃথিবীতে অমর হয়ে থাকবে।
যশোর-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ আফিল উদ্দীন বলেন, ভাষাশহীদদের স্মরণে আজকের এই আয়োজন। দুই বাংলার কয়েক হাজার মানুষ দিবসটি পালন করতে যোগ দিয়েছিলেন।
বেনাপোল পোর্ট থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল হোসেন ভুইয়া জানান, দুই দেশের বিশিষ্টজনদের নিরাপত্তায় সীমান্তে প্রশাসনিক ব্যবস্থা জোরদার ছিল।