ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) গুম হওয়া দুই শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাসের সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা ছাত্রশিবির।
আজ শনিবার (৩০ আগস্ট) বেলা ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে এই কর্মসূচি পালন করেন তাঁরা।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ওয়ালিউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাস ভাইয়ের খোঁজ নাই, প্রশাসনের লজ্জা নাই; আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না; অ্যাকশন টু অ্যাকশন ডাইরেক্ট অ্যাকশন; আওয়ামী লীগের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; গুমকারীদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না; গুমকারীদের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
মানববন্ধনে শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি ইউসুফ আলী বলেন, ‘২০২৪ সালের ৫ আগস্টে ফ্যাসিস্ট শাসনের পতনের পর ১ বছর ২৫ দিন সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও আমরা এই গুম হওয়া ভাইদের হদিস পাইনি। আমাদের ভাইরা কী অবস্থায় আছে, আমাদের সেই খবরটি দিন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়কে স্পষ্ট করে বলতে চাই, এই গুমের পেছনে তৎকালীন প্রশাসনের ব্যক্তিরা জড়িত ছিলেন। অনতিবিলম্বে আপনারা জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি নিশ্চিত করুন। শিক্ষার্থীরা যদি দোষীদের চিহ্নিত করা শুরু করলে আপনাদের গদি ধরে রাখতে পারবেন না।’
শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘দ্রুত গুম কমিশনের রিপোর্ট শিক্ষার্থী ও জাতির সামনে প্রকাশ করুন। সেই সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, প্রক্টর, ওয়ালিউল্লাহ ও আল-মুকাদ্দাসের হল প্রভোস্ট, তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ধরুন, তাহলে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। আপনাদের মুখে কেন কুলুপ, আপনারা কেউ গুমের সঙ্গে জড়িত কি না, আমার তো সন্দেহ হয়। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে আমার ভাইদের সন্ধান চাই।’
গুমের শিকার হওয়া শিক্ষার্থী ওয়ালিউল্লাহর বড় ভাই অধ্যক্ষ খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘আমি যখনই এই বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি তখন আমার পা চলে না। কারও সঙ্গে কথা বলতে গেলে, কণ্ঠ কেঁপে ওঠে। বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার সময় আমার মা-বাবার কাছেও কিছু বলতে পারিনি, কারণ তাঁদের কষ্ট দিতে চাইনি।’
উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যরাতে ঢাকা থেকে কুষ্টিয়াগামী হানিফ এন্টারপ্রাইজের ৩৭৫০ নম্বর বাসে করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন দুই শিক্ষার্থী। পরে আশুলিয়ার নবীনগর থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে তাঁদের তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।