কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুতে ‘গার্ড অব অনার’ নিয়ে অশালীন মন্তব্য ও কটূক্তি করার অভিযোগে মো. আব্দুস সাত্তার (৬০) নামের এক লুঙ্গি ব্যবসায়ীকে আটক করেছেন উপজেলা প্রশাসন। আজ রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকা থেকে তাঁকে আটক করা হয়। পরে তাঁকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
আটক হওয়া আব্দুর সাত্তার উপজেলার যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর যদুবয়রা গ্রামের মৃত বারিক প্রামাণিকের ছেলে। তিনি কুমারখালী পৌরসভার সেরকান্দি এলাকার উপহার লুঙ্গির স্বত্বাধিকারী।
উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বলছেন, গত ৫ অক্টোবর সেরকান্দি এলাকার লুঙ্গি ব্যবসায়ী আব্দুস সাত্তার তাঁর নিজ দোকানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য ও কটূক্তি করেছেন। অভিযুক্ত আব্দুর সাত্তার বলেছেন, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনারে মাটিতে বুটের যে আঘাত দেওয়া হয় এবং বিউগলে যে শব্দ করা হয়, তাতে মনে হয় যেন ঢাক-ঢোল পিটিয়ে কোনো মৃত কুকুরকে পুতে ফেলা হচ্ছে।’
বীর মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন, গত ৬ অক্টোবর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট তদন্ত অনুযায়ী বিচারের দাবিতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগের পর থেকেই ওই ব্যবসায়ী পলাতক ছিলেন। রোববার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে তাঁকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন। পরে আইনগতভাবে পরবর্তী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ সমিতির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা এটিএম আবুল মনসুর মজনু বলেন, ‘লুঙ্গি ব্যবসায়ী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার নিয়ে অশালীন মন্তব্য ও কটূক্তি করেছেন। ঘটনার সত্যতা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও থানার ওসি বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছি। আমরা এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।’
অভিযোগের বিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর ছোট ছেলে আসলাম শেখ বলেন, ‘ব্যবসায়িক কারণে শত্রুতা করে কেউ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ও মর্যাদা পুঁজি করে বাবা ফাঁসাচ্ছে। আমার বাবা নির্দোষ।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মণ্ডল বলেন, ‘এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধাগণকে দেওয়া গার্ড অব অনার নিয়ে কটূক্তি করার বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের পর থেকেই অভিযুক্ত ব্যক্তি পলাতক ছিলেন। আজ তাঁকে আটকের পরে থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরবর্তী আইনি কার্যক্রম পুলিশ পরিচালনা করবেন।’
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহসিন হোসাইন বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের কাছ থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলা সংক্রান্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।’