সোমবার রাত পৌনে ১১টায় ফাঁসি হচ্ছে আলমডাঙ্গার দুই হত্যা মামলার দুই আসামি আজিজুল হক (৬০) ও মিন্টুর (৬৫)। যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ফাঁসি কার্যকর হবে বলে জানিয়েছেন যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান। ইতিমধ্যে আইনগত সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। প্রস্তুত ফাঁসির মঞ্চ ও জল্লাদ।
ফাঁসির আসামিরা হলেন খাসকররা ইউনিয়নের রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের আলিহীমের ছেলে মিন্টু ওরফে কালু এবং একই গ্রামের বদর ঘটকের ছেলে আজিজুল হক।
চুয়াডাঙ্গা আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আলমডাঙ্গা থানার জোড়গাছা হাজিরপাড়া গ্রামের কমেল্লা খাতুন ও তাঁর বান্ধবী ফিঙ্গে বেগমকে ২০০৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর রায়লক্ষ্মীপুর গ্রামের মাঠে হত্যা করা হয়। হত্যার আগে তাঁদের ধর্ষণ করা হয়।
এ ঘটনায় নিহত কমেলা খাতুনের মেয়ে নার্গিস বেগম খুনের পরদিন আলমডাঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত ওই দুজন ছাড়াও আরও দুজনকে আসামি করা হয়। অপর দুজন হলেন একই গ্রামের মো. মহিউদ্দীন ও সুজন আলী। বিচারাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন আসামি মহি।
চার বছর পরে ২০০৭ সালের ২৬ জুলাই চুয়াডাঙ্গার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আজিজুল হক, মিন্টু ও সুজনকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তারপর বিষয়টি হাইকোর্টে গড়ায়। ২০১২ সালে হাইকোর্টও রায়টি বহাল রাখেন। চলতি বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ আজিজুল ও মিন্টুর রায় বহাল রেখে সুজনকে খালাস প্রদান করেন। গত ২০ জুলাই সুজন জেল থেকে ছাড়া পান। অন্যদিকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইলে তা না-মঞ্জুর হয়।
কারাগার সূত্রে জানা যায়, ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত। প্রশিক্ষণ চলছে জল্লাদ মশিয়ার, কেতু, কামালসহ বেশ কয়েকজনের।
এ দিকে আজিজুল ও মিন্টুর সব বিষয় তদারকি করছেন খাসকররা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান রুন্নু। তিনি বলেন, `জেলারের সাথে যোগাযোগ করে জানতে পারি, সোমবার রাত পৌনে ১১টায় ফাঁসি কার্যকর করা হবে। আত্মীয়স্বজন সবাই জানে। গত শনিবার আজিজুল ও মিন্টুর বাবা-মা, ভাই-বোন, আত্মীয়স্বজন, স্ত্রী ও ছেলেমেয়েরা দেখা করেছেন। এ সময় তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।'
এ বিষয়ে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার তুহিন কান্তি খান বলেন, সব প্রস্তুতি শেষ। দুই আসামির পরিবারের পক্ষ থেকে শেষ দেখাও করে গেছেন শতাধিক লোক। ফাঁসি কার্যকরের সময় উপস্থিত থাকবেন জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন ও সিভিল সার্জনের প্রতিনিধিরা।