হোম > সারা দেশ > চুয়াডাঙ্গা

শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্যাতনে জামাইয়ের মৃত্যু, প্রতিবাদে মানববন্ধন

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার বাজদিয়া গ্রামে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের নির্মম নির্যাতন আহত মিঠুন (২৭) মারা গেছেন। ঘটনার পর ৫৪ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত শনিবার রাতে মারা যান তিনি। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে গ্রামবাসী। 

এ ঘটনায় আজ রোববার সকালে প্রতিবাদ মিছিল ও মানববন্ধন করেন গ্রামের নারী-পুরুষ। মানববন্ধনকালে রাস্তার দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে ভোগান্তির সৃষ্টি হয়। জামাই মিঠুনের মৃত্যুর খবরে শ্বশুরবাড়ি লোকজন আত্মগোপনে চলে গেছেন এ ঘটনায় গ্রামবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। 

পুলিশ ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা যায়, জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের বাজদিয়া গ্রামের মৃত হোসেন আহম্মেদের ছেলে নুরনবী মিঠুনের সঙ্গে একই গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে তানিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। তাঁদের দাম্পত্য জীবনে তিন বছরে একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। সম্প্রতি পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। গৃহবধূ তানিয়া স্বামী-সংসার ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যান। 

এ দিকে গত ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে মিঠুনের শ্বশুর আশরাফুল মোবাইল ফোনে তাঁকে তার বাড়িতে ডেকে নেন। এরপর মিঠুন শ্বশুরের ডাকে সাড়া দিয়ে তাঁর বাড়িতে যান। এরপর বাড়িতে গেলে তার শ্বশুর তাঁকে আটকিয়ে রাখেন। একপর্যায়ে আশরাফুল ইসলাম ও তাঁর আত্মীয় একই গ্রামের জামাল হোসেন, নাসির উদ্দিন, আরিফুল ইসলাম ও রহমান শেখ মিলে মিঠুনকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রেখে চার ঘণ্টা বেধড়ক পিটিয়ে আহত করেন। পরবর্তীতে জামাল হোসেন জামাই মিঠুনের অণ্ডকোষ চেপে ধরলে মিঠুন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। ঘটনার অনেক পরে মিঠুনের স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা করান। সেখানে অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে বলা হয় যে, প্রচণ্ড আঘাতের ফলে তাঁর কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। গত শনিবার রাতে মিঠুন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। 

নিহতের চাচা সুলতান আহম্মেদ বলেন, ‘আমার ভাইপো মিঠুনকে চার ঘণ্টা ধরে গাছের সাথে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। পরে মিঠুনের শ্বশুর পক্ষের আত্মীয় জামাল হোসেন তাঁর অণ্ডকোষ চেপে ধরলে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে হাত-পায়ের বাঁধন খুলে দেয়। অনেক রাতে ভাইপো মিঠুনকে তাঁরা মুমূর্ষু অবস্থায় ছেড়ে দিলে আমরা তাঁকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করি। ডাক্তার বলে প্রচণ্ড আঘাতের ফলে তার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। তাঁর বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। আমরা তাঁকে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যায়। ঘটনার পর পরই থানায় একটি মামলা করা হয়েছিল। ওই মামলায় তাঁরা জামিনে আছেন।’ 

এ দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে গ্রামের সর্বস্তরের মানুষ ফুঁসে উঠেছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গ্রামে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ মিছিলের পর গ্রামবাসী সড়ক অবরোধ করে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন পালন করেন। এ সময় রাস্তার দুপাশে শত শত যানবাহন আটকে পড়ে। 

আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম মোক্তার বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত নির্মম ও লোমহর্ষক। এমন ঘটনা আগে কখনো আমাদের এলাকায় ঘটেনি। আমি ঘটনার সাথে জড়িত সকলকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ 

জীবননগর থানার ওসি আব্দুল খালেক বলেন, মিঠুনকে গত ২৩ আগস্ট নির্যাতনের ব্যাপারে থানায় একটি নিয়মিত মামলা হয়েছিল। সেই মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচজন আসামিই জামিনে আছেন। মিঠুনের মৃত্যুর খবর শুনে সমস্ত আসামিরা পালিয়েছেন। আমরা তাদের জামিন বাতিলের জন্য আদালতে আবেদন করব। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা কোনোভাবেই রেহাই পাবে না। গ্রামবাসীর মধ্যে বর্তমানে কোনো উত্তেজনা নেই। পরিস্থিতি পুরোপুরি শান্ত আছে। 

খুলনার পূর্ব রূপসায় যুবককে গুলি করে হত্যা

বাগেরহাটে জাপানপ্রবাসীর বাড়িতে ডাকাতি, স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট

অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান: চার ঘণ্টা পর আগের বক্তব্য প্রত্যাহার করল পুলিশ

খুলনা ওয়াসা: প্রকল্প পরিচালক হলেন ষষ্ঠ গ্রেডের প্রকৌশলী

লেদ কারখানা থেকে উদ্ধার যন্ত্রাংশ দিয়ে ৩০ অস্ত্র তৈরি করা যেত: পুলিশ

খুলনায় ভাবিকে হত্যার অভিযোগে দেবর আটক

খুলনায় অস্ত্র তৈরির কারখানার সন্ধান, আটক ২

লিচুগাছে নারীর ঝুলন্ত লাশ, রয়েছে আঘাতের চিহ্ন

যৌথ অভিযানে অস্ত্র ও গুলিসহ গাংনীতে গ্রেপ্তার ১

মাথায় আঘাত ও বালিশচাপায় মাকে হত্যা, ৬ লাখ টাকা নিয়ে ছেলে উধাও