হোম > সারা দেশ > কুষ্টিয়া

সেদিনের ঘটনা ভুলতে পারছেন না নারায়ণগঞ্জ থেকে বেঁচে ফেরা ২ শ্রমিক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

‘গরিব ঘরের সন্তান। তাই দুচোখ ভরা স্বপ্ন নিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি দুলাভাইয়ের সঙ্গে কাজে গিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা (আন্দোলনকারীরা) আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দিল হাত-পা ও শরীর।’ আজ রোববার সকালে বিছানায় বসে কাতরাতে কাতরাতে কথাগুলো বলছিল হামলা থেকে বেঁচে ফেরা ১৬ বছর বয়সী মাহবুব বিশ্বাস। 

মাহবুব বিশ্বাস কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চর ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আক্কাছ বিশ্বাসের ছেলে। ২০ জুলাই বিকেলে কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালীন আন্দোলনকারীদের দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় তার শরীরের বিভিন্ন অংশ। 

এ ছাড়া সেদিনের আগুনে পুড়ে মারা গেছেন মাহবুবের দুলাভাই সেলিম মন্ডল, ফুপাতো দুলাভাই আব্দুস সালাম। আহত হয়েছেন প্রতিবেশী ফয়সাল মন্ডল, পারভেজ ও হামিদ। হামিদ ঢাকায় একটি হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। তাঁরা সবাই ইউনিয়নের চর ভবানীপুর গ্রামের বাসিন্দা। 

মাহবুব বলে, ‘এক ফোঁটাও ঘুমাতে পারছি না। চোখ বুঝলেই ভেসে উঠছে সেদিনের দৃশ্য। আগুনের কালো ধোঁয়া। কানে বাজছে গুলির শব্দ। কাটছে নির্ঘুম রাত। বিশ্বাসই হয় না যে এখনো বেঁচে আছি।’ 

মাহবুব জানায়, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ উপজেলার চিটাগাং রোড এলাকায় প্রিয়ম নিবাস নামের একটি বহুতল ভবনের দ্বিতীয় তলায় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক শাখায় সাজসজ্জার কাজ করছিলেন মাহবুব, সেলিম, সালাম, ফয়সাল, হামিদ, পারভেজসহ অন্তত ১৪ জন। তার ভাষ্য, ভবনের পাঁচতলায় ছিল একটি পুলিশ ক্যাম্প। আর নিচতলায় ছিল মার্কেট। 

আন্দোলনকারীরা দুপুরেই আহত মাহবুব ও ফয়সালের মুঠোফোন কেড়ে নিয়ে মারধর করে। পরে শ্রমিক পরিচয় দিয়ে রক্ষা পায় তারা। এরপর বিকেল ৪টার দিকে ভবনের বাইরে থেকে আন্দোলনকারীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। শোনা যায় গুলির শব্দও। পরে সাড়ে ৪টায় ব্যাংকের প্রবেশপথে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিলে ঘটে ভয়াবহ দুর্ঘটনা। 

মাহবুবের বাবা আক্কাছ বিশ্বাস বলেন, ‘ওরা তো আন্দোলনে ছিল না। সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। আগুনে পুড়ে আমার দুই জামাই মারা গেছেন। ছেলে ও আত্মীয়রা আহত হয়েছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার ও ক্ষতিপূরণ চাই।’ 

সেদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত ফয়সাল মন্ডল বলেন, ‘আমরা ১৪ জন ব্যাংকে কাজ করছিলাম। দুপুরেই ভবনের বাইরে থেকে শুধু গুলির আওয়াজ আসছিল। আর বিকেলে ব্যাংকের গেটে আগুন দিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। আগুনের কারণে প্রচুর ধোঁয়া ছিল। অন্ধকারে কিছু দেখা যাচ্ছিল না। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। ভবন থেকে বেরোনোর জন্য আমরা কয়েকজন মিলে একটি দেয়াল ও জানালার গ্লাস ভেঙেছিলাম। পরে সিঁড়ি দিয়ে নিচে নামতে গিয়ে আমার হাত, পা ও শরীর পুড়ে যায়।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘পোড়া নিয়েই নিচে এসে কিছু দূর হেঁটে সড়কের ওপর পড়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে একজন অজ্ঞাত আপু আমাকে আর মাহবুবকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে সিএনজিতে তুলে দেন। সিএনজি করে ওই রাতে ঢাকা সাভার এলাকায় এক আত্মীয় বাড়িতে আশ্রয় নিই। সেখান থেকে ২১ জুলাই অ্যাম্বুলেন্স করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পৌঁছাই আমরা।’ 
 
ফয়সাল মন্ডল আরও বলেন, ‘অনেক স্বপ্ন নিয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে জীবিকার্জনের পথ বেঁচে নিয়েছিলাম। এখন শুধু বুক ভরা হতাশা আর আতঙ্ক। কোনোভাবেই ভুলতে পারছি না সেদিনের ঘটনা।’ 

এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম মিকাইল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত কুমারখালী বাড়ি এমন একজন ছাত্রসহ চারজন মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পরিবার থেকে লিখিত আবেদন করলে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ আসলে তা দেওয়া হবে।

খুলনায় দেশীয় অস্ত্র, গুলি ও মাদকসহ গ্রেপ্তার ৫

খুবির প্রথম বর্ষের চার ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ

খুলনায় সকাল থেকেই মনোনয়ন জমা দেওয়া শুরু

ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী নিহত

খুলনায় দুর্বৃত্তদের হামলায় দুই যুবক গুরুতর আহত

খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতাকে গুলি: সহযোগীসহ শুটার ঢাকাইয়া শামীম গ্রেপ্তার

মাগুরা-২: রাজনীতি থেকে অবসরের ঘোষণা সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হকের

খুলনায় মা হত্যায় ছেলে গ্রেপ্তার

খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতাকে গুলি: যুবশক্তির সেই নেত্রী কারাগারে

খুলনায় শ্রমিক শক্তির নেতা মোতালেব হত্যার চেষ্টা: মামলা ডিবিতে, গ্রেপ্তার তন্বি অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার দাবি