ফেনীর ফুলগাজী উপজেলার দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা তনিমা সুলতানা ভূঁঞা। পেশায় একজন শিক্ষক। বুধবার রাতের বৃষ্টিতে তার ঘরে পানি ঢুকে পড়ে। নষ্ট হয় আসবাব। গবাদিপশু নিয়ে পরিবারসহ আশ্রয় নেন প্রতিবেশী শাহজাহান মজুমদারের দোতলা বাড়ির ছাদে।
তনিমার মতো আরও ১০টি পরিবার এখন ওই ছাদে অবস্থান করছে। আশপাশের গ্রামগুলোতেও একই অবস্থা। পরশুরাম, ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া উপজেলার শতাধিক গ্রাম এখন প্লাবিত।
টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ২১টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। নদীর পানি কিছুটা কমলেও ভাঙা অংশ দিয়ে পানি ঢুকে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
দক্ষিণ আনন্দপুর গ্রামের আলো মজুমদার বলেন, ‘গত বছরও ছাদে আশ্রয় নিয়েছিলাম, এবারও একই দশা। পানি বেশি না হলেও বসবাসের মতো অবস্থায় নেই। সবচেয়ে কষ্ট সুপেয় পানির জন্য।’
ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন মজুমদার বলেন, নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে নেমে এলেও ভাঙনস্থল দিয়ে পানি ঢুকছে। পানি নামার পর বাঁধ মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ফেনীর চারটি উপজেলায় অন্তত ২০ হাজার মানুষ দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া ও সদর উপজেলার ৪৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে প্রায় ৭ হাজার মানুষ। ত্রাণ সহায়তায় ছয় উপজেলায় সাড়ে ১৭ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৫১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবারও হালকা বৃষ্টি হতে পারে।