ফরিদপুরে মুনসেরাতুল রহমান আলিফ নামের এক কলেজশিক্ষার্থীকে হত্যার মামলায় সিফাত হোসেন আবির নামের এক যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ডের নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে রাশেদ খাঁ ও হিমেল নামের দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অশোক কুমার দত্ত এ রায় ঘোষণা করেন। রায়ে তিনি বলেন, সিফাতের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তবে রাশেদ ও হিমেলের বিরুদ্ধে প্রমাণের অভাব রয়েছে।
যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত সিফাত ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। খালাস পাওয়া রাশেদ ও হিমেল চাঁনমারী গ্রামের অধিবাসী। নিহত আলিফ ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার হাসামদিয়া গ্রামের কাজী জিল্লুর রহমানের ছেলে এবং জেলা শহরের সরকারি ইয়াছিন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১৮ সালের ৩১ অক্টোবর বিকেলে আলিফের সঙ্গে রাজেন্দ্র কলেজের একাডেমিক ভবনের সামনে সিফাত ও অন্যদের তর্কাতর্কি হয়। সে সময়ে সিফাত ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথায় আঘাত করলে রাশেদ ও হিমেল আলিফের হাত-পা চেপে ধরেন। পরে অন্য সহপাঠীরা গুরুতর আহত অবস্থায় আলিফকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপর মেডিকেল কলেজে নেওয়া হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে আলিফ মারা যান।
এ ঘটনায় আলিফের বাবা কাজী জিল্লুর রহমান পাঁচজনকে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় হত্যা মামলা করেন। পরে দীর্ঘ শুনানি শেষে একমাত্র আসামি হিসেবে সিফাত হোসেনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন আদালত।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মো. রকিবুল ইসলাম বিশ্বাস বলেন, ‘এই রায়ে প্রমাণিত হয়েছে, অপরাধ করে পার পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা বিচার পেয়ে সন্তুষ্ট। রায় ঘোষণার সময় সিফাত আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাঁকে পুলিশের পাহারায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’