সংসারের হাল ধরতে পাঁচ মাস আগে কাজের সন্ধানে সৌদি আরবে পাড়ি জমান ফরিদপুরের সালথা উপজেলার নুর আলম খান (৩৬)। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস, দুই মাসের মাথায় গত জানুয়ারিতে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন তিনি। নানা জটিলতার কারণে তাঁর মৃত্যুর তিন মাস পর লাশ এসেছে দেশের মাটিতে।
আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় সালথা উপজেলার আটঘর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের ঈদগাহ মাঠে মরহুমের জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়। এর আগে গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ১১টায় ঢাকা বিমানবন্দরে মরদেহটি পৌঁছায়। পরে নানা প্রক্রিয়া শেষে রাত ২টায় মরদেহটি বুঝে পান পরিবারের সদস্যরা এবং ভোর ৫টায় নিজ বাড়িতে মরদেহ পৌঁছায় বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
নিহত নুর আলম ওই গ্রামের উমর খানের ছেলে। তাঁর এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে তাঁর স্ত্রী ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ছেলে-মেয়ের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য ২০২৪ সালের নভেম্বরে সৌদি আরবে পাড়ি জমান নুর আলম খান। দালালের মাধ্যমে গিয়ে সেখানে কাজ না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে কাজের সন্ধান করেন। গত ২০ জানুয়ারি কাজের সন্ধানে বেরিয়ে রিয়াদে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন তিনি। পরে তাঁকে রিয়াদ ক্যান্টনমেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জীবন বাঁচাতে এ সময় তাঁর দুটি পা কেটে ফেলেন চিকিৎসকেরা। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় গত ১১ ফেব্রুয়ারি তিনি মারা যান। মৃত্যুর খবরে তাঁর বাড়িতে নেমে আসে শোকের ছায়া।
নিহতের আত্মীয় মাহফুজ খান বলেন, ‘ধারদেনা করে বিদেশ গিয়েছিল আমার ভায়েরা নুর আলম খান। পৈতৃক ভিটা বাদে তার কোনো জমি নাই। তার মৃত্যুতে স্ত্রী-সন্তানের ভবিষ্যৎ খুবই খারাপ। কে দেখবে এই সংসার। নুর আলম প্রবাসে মারা যাওয়ার তিন মাস পর লাশ দেশে আসল। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জানাজা শেষে লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।’