ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে সীমানাপ্রাচীরের ওপরই বহুতল স্কুল ভবন নির্মাণ করার অভিযোগ উঠেছে একটি বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) বিরুদ্ধে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে প্রতিবেশী তিনটি পরিবার। ক্ষতিগ্রস্তরা এ বিষয়ে পৌর প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের সূত্রে জানা গেছে, পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ছোট কামার গ্রামের সরকারি কলেজ রোড এলাকায় ভবনটি নির্মাণ করছে সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটির (এসডিসি) বোয়ালমারী শাখা-১। এনজিওটির নির্বাহী পরিচালক কাজী আশরাফ হাসান স্থানীয় বাসিন্দা হওয়ায় জোরপূর্বক কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করেছেন। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন পাশের বাসিন্দা সৌমিত্র মজুমদার, কাকলী রানী পাল ও অসীম কুমার রাজবংশী।
তিনজন সম্প্রতি বোয়ালমারী পৌর প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে উল্লেখ করেন, সংস্থাটি জমির সীমানা থেকে কোনো জায়গা না ছেড়ে প্রাচীরের ওপর থেকে বিধিবহির্ভূতভাবে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সীমানাপ্রাচীরকে ভবনের দেয়াল হিসেবে ব্যবহার করে নির্মাণকাজ করা হচ্ছে। এভাবে তিনতলা গড়ে তোলা হয়েছে। ভবনটিতে বর্তমানে জানালা নির্মাণসহ বৈদ্যুতিক কাজ চলমান।
ক্ষতিগ্রস্ত অসীম কুমার বলেন, ‘ভবন নির্মাণের শুরু থেকে অভিযোগ করে এলেও কোনো কথা শোনেনি। এমনকি পৌরসভা থেকেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। মালিক অনেক টাকাপয়সাওয়ালা হওয়ায় আমাদের ক্ষতি করেছে। ভবিষ্যতে আমাদের জমিতে কোনো কাজ করতে গেলে বা বিক্রি করলেও এই ভবন বাধা হয়ে দাঁড়াবে। প্রশাসনের কাছে আমাদের দাবি, যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে যেন ক্ষতির হাত থেকে আমাদের রক্ষা করে।’
এ নিয়ে কথা হলে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, ভবন নির্মাণের জন্য কোনো অনুমতি নেয়নি এনজিওটি। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী জমি ছেড়ে ভবন নির্মাণের নিয়ম থাকলেও কিছুই মানা হয়নি। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযোগগুলোকে ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেন এনজিও এসডিসির নির্বাহী পরিচালক আশরাফ হাসান। তিনি বলেন, ‘এটি আমার সংস্থার একটি স্কুলের ভবন। তিনতলা ভবনের দেড়তলা হয়ে গেলেও কেউ অভিযোগ করেনি। এখন তৃতীয় একটি পক্ষের ইন্ধনে ক্ষতি করার জন্য অভিযোগ করছে। আমরা মানুষের ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করে থাকি, কারও ক্ষতি করা কাম্য নয়। এ ছাড়া পৌরসভায় আবেদন করা হয়েছে।’
যোগাযোগ করা হলে পৌর প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তানভীর হাসান চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েকজন প্রতিবেশী অভিযোগ করার পর পৌরসভা থেকে সরেজমিনে লোক পাঠানো এবং মৌখিকভাবে নিয়মবহির্ভূতভাবে কাজ না করার কথা জানানো হয়। এরপরও নির্মাণকাজ চালিয়ে গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া এবং বিল্ডিং কোড না মানলে প্রয়োজন হলে ভেঙে ফেলা হবে।’