ফরিদপুরে সিজারিয়ান অপারেশনের সময় নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙে ফেলার ঘটনায় আরামবাগ হাসপাতালের মালিক ও ৩ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে ভুক্তভোগীর পরিবার। আজ সোমবার দুপুরে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ জলিল এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
ওসি জানান, গত শনিবার বিকেলে নবজাতকের বাবা আরিফুল আলম সজল বাদী হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এজাহার দাখিল করেন। বিষয়টির প্রাথমিক তদন্ত শেষে মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে।
এই মামলায় আরামবাগ প্রাইভেট হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মাসুদ আলম, কর্তব্যরত চিকিৎসক শারমীন সুলতানা জুঁই, প্রিন্স ও রাজিবসহ অজ্ঞাত ৩-৪ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেছেন, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ভুয়া সরকারি কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে সিজারিয়ান অপারেশন করে নবজাতকের হাড় ভেঙে দিয়েছেন। প্রতিকার চাইলে ভুক্তভোগী পরিবারকে হুমকি দিয়েছেন আসামিরা।
এ ছাড়া শারমীন সুলতানা জুঁই ওই হাসপাতালের সাইনবোর্ড ও ভিজিটিং কার্ডে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দিলেও তিনি প্রকৃতপক্ষে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক নন। আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে প্রসূতির সিজারিয়ান অপারেশনের সময় সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করায় এবং অবহেলা করায় তাঁর নবজাতকের ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার ফরিদপুরের সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমানের কাছে আরিফুল আলম সজল একটি লিখিত অভিযোগ দেন।
অভিযোগে আরিফুল আলম উল্লেখ করেন, গত ১৩ ডিসেম্বর আরামবাগ হাসপাতালে তাঁর স্ত্রী মুক্তার সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়। এ সময় নবজাতকের হাতের হাড় ভেঙে ফেলেন চিকিৎসকেরা। পরে ঢাকার একটি হাসপাতালের চিকিৎসক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তার অভিযোগের ভিত্তিতে গত বুধবার দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. মো. ছিদ্দীকুর রহমান ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানিয়া আক্তার আরামবাগ হাসপাতালে অভিযান চালান। এ সময় তাঁরা পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ওই হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন।
হাসপাতালটিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্স না থাকা এবং অপ্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স দিয়ে হাসপাতালের কার্যক্রম পরিচালনার প্রমাণ পেয়েছেন বলে জানান সিভিল সার্জন।