ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পূর্বশত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের কোপে জখম তিন যুবকের মধ্যে আরেকজন মারা গেছেন। তাঁর নাম রায়হান শেখ। তিনি আজিমনগর ইউনিয়নের থানমাত্তা গ্রামের ফখরুদ্দিন শেখের ছেলে।
আজ বুধবার আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন।
গত শনিবার রাতে থানমাত্তা গ্রামের খালের সেতুর ওপর ওই হামলার ঘটনা ঘটে। এতে এলোপাতাড়ি কোপে একই গ্রামের জাহাঙ্গীর খালাসির ছেলে ইয়াছিন শেখ (১৯), রায়হান শেখ (২৪) ও সাকিব মাতুব্বর নামের আরেক যুবক আহত হন। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে ইয়াছিন মারা যান। আর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে মারা যান রায়হান।
এ ঘটনায় গত রোববার ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর খালাসি বাদী হয়ে ভাঙ্গা থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ মামলার আসামি মো. ইসমাইল ব্যাপারীকে গত সোমবার সন্ধ্যায় রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। তাঁকে মঙ্গলবার রাতে ভাঙ্গা থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, থানমাত্তা গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুটি পক্ষ রয়েছে। একপক্ষের নেতৃত্ব দেন ভুলু খন্দকার এবং অপরপক্ষের নেতৃত্বে আছেন বাদশা শরীফ। দুই পক্ষের মধ্যে অতীতে বিভিন্ন সময়ে সংঘাত-সংঘর্ষ ঘটেছে। ভুলুর পক্ষের লোক ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, শনিবার রাতে সেতুতে বসে গল্প করছিলেন তিন যুবক। রাত ১১টার দিকে বেশ কিছু লোক ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে তিনজনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ধানখেতে ফেলে যায়। তিনজনের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তিনজনকে ঢাকায় নেওয়ার পথে ইয়াছিনের মৃত্যু হয়।
ইয়াছিনের বাবা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বাদশা শরীফের নির্দেশে তাঁর ছেলের নেতৃত্বে কিশোর গ্যাং আমার ছেলেসহ তিনজনকে কুপিয়ে নাড়িভুঁড়ি বের করে দেয়। এর মধ্যে আমার ছেলেসহ দুজন মারা গেল। আমি হত্যাকারীদের বিচার চাই।’
এ বিষয়ে ভাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন বলেন, ‘পূর্বশত্রুতার জেরে ও আধিপত্যের বিরোধে দুজন খুনের ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় (ইয়াছিনের মৃত্যু) মামলা হয়েছে। রায়হানের মৃত্যুর বিষয়টি একই মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান রয়েছে।’