দিনের আলোয় তারা রংমিস্ত্রি, সিএনজি অটোচালক, সবজি বিক্রেতা, মুদিদোকানি, অনলাইনে ফুড ডেলিভারিসহ নানা পেশায় জড়িত। আশপাশের লোকজনের চোখে তারা প্রত্যেকেই জীবন ধারণের জন্য কঠোর পরিশ্রমী। পেশাগত কারণে তাদের বিভিন্ন গ্রাহকের বাসায় যেতে হয়। এর ফলে তারা নিজেদের টার্গেটের নানা তথ্য সহজেই পেয়ে যায়। দিনের এই শ্রমজীবীরাই রাতের অন্ধকারে হয়ে ওঠে দুর্ধর্ষ ডাকাত।
দিনের বেলায় নিয়োজিত থাকা পেশার আড়ালে পাওয়া তথ্য দিয়ে অস্ত্র হাতে অত্যন্ত সুকৌশলে লুটে নিতেন বাসাবাড়িতে থাকা মূল্যবান সামগ্রী। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুর, কেরানীগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার বেশ কয়েকটি ডাকাতির ঘটনা তদন্ত করতে গিয়ে দুর্ধর্ষ এই ডাকাত চক্রের সন্ধান পায় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) তেজগাঁও বিভাগ। সম্প্রতি অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে মোহাম্মদপুর থেকে এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—মো. সুজন হাওলাদার (৩২), রবিউল আউয়াল ওরফে রবি (১৯), মো. বাবু ওরফে জুয়েল (২২), মো. রনি (১৯), একরাম আলী (৩৩), ইব্রাহিম মিজি (২০)। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে একনলা বন্দুক, ডাকাতিতে ব্যবহৃত একটি সিএনজি অটোরিকশা, চাপাতি, লোহার তৈরি দুটি ছোরা, লোহার রড, পাইপ কাটার রেঞ্চ ও নগদ ২৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশীদ বলেন, ‘সিএনজি অটোচালক, অনলাইনভিত্তিক ফুড ডেলিভারি ম্যান, রংমিস্ত্রি, মুদিদোকানের কর্মচারীসহ বিভিন্ন পেশার আড়ালে বিভিন্ন বাসা রেকি করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়। এরপর রাতের অন্ধকারে ডাকাতির উদ্দেশ্যে সেই সব বাসায় প্রবেশ করে লুটপাট করে। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদপুরে এক ব্যবসায়ীর বাসাসহ সাভারের ধামরাই, কেরানীগঞ্জ ও মুন্সিগঞ্জের কয়েকটি ডাকাতির সঙ্গে জড়িত এই চক্রের ছয় সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল সোমবার রাতে মোহাম্মদপুর থানার বছিলা সিটি ডেভেলপার্স লিমিটেড এলাকায় ডাকাতির প্রস্তুতির সময় তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় ডাকাতিতে ব্যবহৃত অস্ত্রসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি উদ্ধার করা হয়।’
গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা আরও জানান, গ্রেপ্তার চক্রের সদস্যদের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় দুটি ডাকাতি মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে।
ডিবির এই যুগ্ম কমিশনার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, চক্রের সদস্যরা সবাই নানা পেশায় জড়িত। এসব পেশার আড়ালে থেকেই ডাকাতি করে আসছে। চক্রের সদস্যসংখ্যা ১৫ থেকে ১৬। চক্রটির মূল হোতা সাদ্দাম হোসেন। তাঁকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। প্রত্যেক সদস্যদের বিরুদ্ধে সসাত-আটটি করে মামলা রয়েছে।