গত বছর জুলাই আন্দোলন চলাকালে বাসার বারান্দায় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছিল আইনুন নাহারের ছোট মেয়ে নাঈমা সুলতানা। সেই ঘটনার এক বছর পর বড় মেয়ে তাসপিয়া সুলতানা গতকাল সোমবারে বেঁচে গেল অল্পের জন্য। রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে যুদ্ধবিমানটি যখন আছড়ে পড়ে, তার কিছুক্ষণ আগে ক্লাস শেষ করে ঝালমুড়ি কিনতে গিয়েছিল সে।
তাসপিয়া মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। তার বোন নাঈমা সুলতানা একই স্কুলের দশম শ্রেণিতে পড়ত। গত বছর ১৯ জুলাই পুলিশের গুলিতে তার মৃত্যু হয়। আইনুন নাহার জানান, সেই ঘটনার পর তাঁরা এখনো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেননি। জুলাই মাসের দুর্বিষহ স্মৃতি নিয়ে কিছুদিন ধরে অস্থিরতার মধ্যে দিন কাটছিল তাঁদের। তাসপিয়া রাতে ঠিকভাবে ঘুমাতেও পারছিল না। এর মধ্যেই আবার একটা বড় দুর্ঘটনার সাক্ষী হলো সে।
আইনুন নাহার মোবাইল ফোনে আজকের পত্রিকাকে জানান, ক্লাস শেষ করে ঝালমুড়ি কিনতে গিয়েছিল তাসপিয়া। তা না হলে তার জীবনেও ভয়াবহ কিছু ঘটতে পারত।
আইনুন নাহার বলেন, ‘তাসপিয়ার চোখের সামনেই দুর্ঘটনা হয়। ও বারবার অজ্ঞান হয়ে যাচ্ছে। প্রথমে ওকে উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে রোগীদের ভিড়ে ওকে রাখা সম্ভব হয়নি। এখন বাসায় এনে স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।’
তাসপিয়া শারীরিকভাবে আঘাত না পেলেও মানসিকভাবে আতঙ্কগ্রস্ত অবস্থায় আছে বলে জানান আইনুন নাহার। তিনি বলেন, ‘জ্ঞান ফিরলেই কান্নাকাটি করতেছে। আর বলতেছে, ওদের (হতাহত শিক্ষার্থীদের) কী হবে?’
নাঈমা ও তাসপিয়ার ছোট ভাই আব্দুর রহমানও মাইলস্টোনের শিক্ষার্থী। তবে সে দুর্ঘটনাস্থল দিয়াবাড়ি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী নয়। সে উত্তরার ৯ নম্বর সেক্টরে স্কুলের অন্য শাখায় তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ছে বলে জানান মা আইনুন নাহার।
নাঈমার বাবা গোলাম মোস্তফা থাকেন চাঁদপুরে, যেখানে তিনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য ঢাকায় ভাড়া বাসায় থাকেন আইনুন নাহার।