প্রেমিকের সঙ্গে অভিমান করে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে দোহার উপজেলার উত্তর শিমুলিয়া কবরস্থান এলাকার এক কলেজছাত্রী। গতকাল রোববার বিকেলে নিজ ঘরের ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ওই কলেজছাত্রী আত্মহত্যা করেছে। নিহত ছাত্রীর নাম সাবরিন জেবিন (১৮)।
নিহত জেবিন উত্তর শিমুলিয়া গ্রামের প্রবাসী ফরহাদের মেয়ে এবং মালিকান্দা মেঘুলা স্কুল এন্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের ব্যবসায়িক শিক্ষা শাখার ১ম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
জেবিনের মামি নাসরিন বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিকেলে জেবিন সকলের অগোচরে নিজ ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ পেয়ে সন্দেহ হলে দরজায় কড়া নাড়ে পরিবারের লোকজন। কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে জেবিনকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে ওকে দ্রুত দোহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক জেবিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের মামি আরও জানান, মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার জানাবাদ গ্রামের জামাল গাজীর ছেলে রিফাতের (২০) সঙ্গে জেবিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। প্রেমের বিষয়টি জানার পর দুই পরিবারই ওদের সম্পর্ক মেনে নেয়। পনেরো দিন আগে ওদের আংটি পড়ানোর কথা ছিল। কিন্তু এখনো আংটি পড়ানো না হওয়ায় ওদের দু’জনের মধ্যে ঝগড়া চলছিল। রিফাতের সঙ্গে অভিমান করেই জেবিন এমন ঘটনা ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
নিহতের মা তাসলিমা বলেন, ‘‘গত ২ দিন যাবৎ আমার মেয়ের মন খুব খারাপ ছিল। আমি বুঝতে পারছিলাম ওর কোনো সমস্যা হয়েছে। ওকে আমি কাঁদতে দেখে জিজ্ঞেস করেছিলাম কি হয়েছে? উত্তরে আমার মেয়ে জানিয়েছিল, 'রিফাত আমাকে খারাপ ভাষায় গালাগাল করেছে। আমাকে মরে যেতে বলেছে।' তারপরই আজ বিকেলে আমার মেয়ে এমন কান্ড ঘটাল।’’
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ইসরাত করিম বলেন, হাসপাতালে আনার আগেই জেবিনের মৃত্যু হয়েছে। গলায় ফাঁস দিয়েই জেবিন আত্মহত্যা করেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
দোহার থানার ডিউটি অফিসার এসআই লিয়াকত জানান, আত্মহত্যার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।