হোম > সারা দেশ > ঢাকা

ধর্ষণ মামলার বাদীকে ব্ল্যাকমেলের ঘটনায় থানায় সালিশ, প্রতিবাদে ঘেরাও

মেহেরপুর প্রতিনিধি

গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে স্থানীয় ছাত্র–জনতা। ছবি: আজকের পত্রিকা

মেহেরপুরে ৯ বছর বয়সী শিশু ধর্ষণ মামলার আসামি জামিন পেয়ে বাদীকে ব্ল্যাকমেল করে। প্রতিকার চেয়ে বাদী থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি নিয়ে সালিশে বসে পুলিশ। এ সময় পুলিশের এক এসআই অভিযুক্তকে বাঁচাতে পক্ষপাতিত্ব করেন। এসব অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে সদর থানা ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেরপুর সদর উপজেলার একটি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে বসবাসকারী ৯ বছরের শিশুকে ধর্ষণ করেন মদনাডাঙ্গা গ্রামের বাইজিদ নামের এক যুবক। ধর্ষণের ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন বাইজিদের সহযোগী আলামিন হোসেন। এ ঘটনায় শিশুটির মা বাদী হয়ে গত ৯ সেপ্টেম্বর বাইজিদ, আলামিন ও বরকত আলীর নামে মেহেরপুর আদালতে ধর্ষণ মামলা করেন। আসামিরা গ্রেপ্তার হয়ে কয়েক মাস হাজতবাসের পর জামিনে মুক্ত হন।

এরপর থেকে ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশের হুমকি দিয়ে বাদীকে মামলা তুলে নিতে বলেন আসামিরা। বাদী প্রতিকার চেয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন। বিষয়টি মীমাংসা জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সদর থানার এসআই সুজয় কুমার উভয় পক্ষকে নিয়ে থানায় বসেন। এ সময় এসআই সুজয় কুমার ধর্ষণ মামলার আসামিদের পক্ষ থেকে বাদীকে চাপ দিতে থাকেন। খবর পেয়ে থানায় গিয়ে প্রতিবাদ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও স্থানীয় লোকজন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী তুষার ও সিয়াম অভিযোগ করেন, ধর্ষক ও তার সহযোগীদের বিচার চাইলে ক্ষিপ্ত হয়ে এসআই সুজয় কুমার থানার মধ্যেই তাঁদের লাঠিপেটা করেন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে থানা ঘেরাও করে প্রতিবাদ করেন। এসআই সুজয় কুমার ও ধর্ষকদের দৃষ্টান্তমূলক সাজার দাবিতে থানা ও থানার আশপাশ এলাকায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে ছাত্র-জনতা।

এদিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে সেনাবাহিনীর একটি দল থানায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। সেখানে উপস্থিত হয়ে মেহেরপুর পুলিশ সুপার (এসপি) মাকসুদা আকতার খানম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।

ভুক্তভোগী শিশুটির পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস আগে শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করেন বাইজিদ নামের এক যুবক। সেটির ভিডিও ধারণ করে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জনের মোবাইল ফোনে। বাইজিদসহ কয়েকজনকে আসামি করে আদালতে মামলা করেন শিশুটির মা। এই মামলায় সম্প্রতি জামিনে বেরিয়ে এসে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন অভিযুক্তরা। এমনকি ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে অর্থ আদায়ও করেন। তাঁরা গত রোববার রাতে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেন। এরপর বিষয়টি থানায় জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উভয় পক্ষকে নিয়ে সদর থানায় বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। এ সময় দুই পক্ষ বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে পুলিশ ধর্ষকের পক্ষ নিয়ে ছাত্র-জনতার ওপর লাঠিচার্জ করেছে। এরপর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা থানা চত্বরে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন। ঘটনার একপর্যায়ে তাঁরা থানার মূল ফটকে তালা লাগিয়ে দেন। পুরো থানা চত্বর ঘিরে রাখেন। হামলাকারী পুলিশ সদস্যদের শাস্তির দাবি জানান। অভিযুক্ত বাইজিদ ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবিও তোলা হয়।

রাত ১০টার পর ঘটনাস্থলে আসেন এসপি মাকসুদা আক্তার খানম। উভয় পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করেন তিনি। একপর্যায়ে তাঁরা রুদ্ধদ্বার বৈঠকে বসেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে এসপি ঘোষণা দেন, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাইজিদ ও তার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দাবি পূরণ হওয়ায় কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা।

এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, তাঁদের তিনটি দাবি পূরণ হওয়ায় আপাতত কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী রোববার আসামিদের আদালতে তোলার সময় সেখানে থাকবেন শিক্ষার্থীরা।

ইমতিয়াজ অভিযোগ করেন, ধর্ষকের বয়স ২০ বছরের ওপরে হলেও ১৫ বছর দেখিয়ে জামিন নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকেই দায়ী করেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান ইমতিয়াজ।

এর আগে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঘটনাস্থলে যায় সেনাবাহিনীর একটি দল। ঘণ্টাব্যাপী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা করে। উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়।

এ সময় এসপি মাকসুদা আক্তার খানম বলেন, শিক্ষার্থীদের তিনটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত ধর্ষকসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের যৌথ বাহিনীর মাধ্যমে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা হচ্ছে। এ ছাড়া আগামী রোববার আসামিদের আদলেতে তোলার পর জামিনের বিরোধিতা করা হবে। ছাত্র-জনতাকে শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়ে এসপি বলেন, কোনো পুলিশ সদস্যই ধর্ষকের পক্ষে নয়।

মাদারীপুরের ৩টি আসন: বিভক্ত বিএনপি, এগিয়ে জামায়াত

মিরপুরে খাঁচা থেকে বেরিয়ে এল সিংহী, আর চিড়িয়াখানা থেকে দর্শনার্থীরা

গুলশানে ৫৪০ বোতল বিদেশি মদ জব্দ, গ্রেপ্তার ১

জাবিতে শেখ পরিবারের নামে থাকা ৪ হলের নাম পরিবর্তন

সাবেক এমপি শাজাহান খানের মেয়ে ও নুরুন্নবী চৌধুরীর স্ত্রীর নামে দুদকের মামলা অনুমোদন

ধর্ষণের মামলায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন ছাত্র রিমান্ডে

নির্বাচনের আগে ডিএমপির ৫০ থানায় নতুন ওসি

যন্ত্রপাতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অনন্ত নিটওয়্যারের এমডিসহ চারজনের বিরুদ্ধে ঠিকাদারের মামলা

বাম দলের যমুনা যাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা, আহত ২০

দলবদ্ধ ধর্ষণ ও ভিডিও করে ব্ল্যাকমেল: গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের চার শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার