দেশে ভুল তথ্য ছড়িয়ে পড়ার প্রধান উৎস হলো সরকার বলে মন্তব্য করেছেন ইংরেজি দৈনিক নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবীর । আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মালিবাগে স্কাই সিটি হোটেলে আয়োজিত ‘কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ শিরোনামে এক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন। সেন্টার ফর গভার্নেন্স স্টাডিজ-সিজিএস আয়োজিত এই সংলাপে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের সংবাদকর্মী ও দেশের কয়েকটি ফ্যাক্ট চেকার প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
নূরুল কবীর বলেন, ‘দেশে ভুল তথ্য প্রদানের প্রধান উৎস হলো সরকার। সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয় বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, অথচ বর্তমান সময়ে এসে আমরা দেখতে পাচ্ছি এটি সঠিক তথ্য নয়। বিদ্যুতের ক্ষেত্রেও সরকার এমন ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। ইতিহাস থেকে দেখা যায়, বিরোধী দলগুলোও ভুল তথ্য ছড়ায়।’
নিউ এজ সম্পাদক আরও জানান, যে বিষয়ে প্রতিবেদন করা হয়, তার সঙ্গে শিরোনামের মিল থাকে না। এ জন্য রিপোর্টার ও সম্পাদকদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে।
উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে দেশে সাংবাদিকতার বিভিন্ন সমস্যার বিষয়গুলো উঠে আসে এবং এর ফলে বিভ্রান্তিমূলক তথ্য, মিথ্যা খবর ও গুজব ছড়িয়ে পড়ার দিকটিও আলোচনা করা হয়। আলোচিত সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে তথ্য সংগ্রহে বাধা দেওয়া বা তথ্য না দেওয়া, সরকারের সদিচ্ছার অভাব ও ভুল তথ্য প্রদান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ভয়, রিপোর্টারদের নিয়মিত কাজের চাপ ও তার ফলে মানসম্পন্ন সংবাদের ঘাটতি, পর্যাপ্ত রিসোর্সের অভাব, প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মালিকানাধীন মিডিয়া হাউস ও তাঁদের নিজস্ব এজেন্ডা বাস্তবায়ন ইত্যাদি। এ ছাড়া, সংবাদমাধ্যমে নির্ভুল তথ্য যাচাইয়ের জন্য ফ্যাক্ট-চেকারদের সঙ্গে সমন্বয় ও কীভাবে তথ্য যাচাই করা যায় সে সম্পর্কেও আলোচনা করা হয়।
সংলাপে সিজিএসের চেয়ারম্যান ড. মনজুর আহমেদ চৌধুরী বলেন, দেশের মানুষ যদি গণমাধ্যমের ওপর থেকে আস্থা হারিয়ে ফেলেন, তা দেশের জন্য ক্ষতিকর। গণমাধ্যমকর্মীদেরকেই এর জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংলাপের শেষ পর্বে গণমাধ্যমকর্মীরা একটি জরিপে অংশগ্রহণ করেন এবং নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে সংবাদমাধ্যমে ভুল ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থার বিভিন্ন উপায় তুলে ধরেন।
‘কনফ্রন্টিং মিসইনফরমেশন ইন বাংলাদেশ’ সিজিএসের ওই বিষয়ের ওপর ধারাবাহিক কার্যক্রমের প্রথম আয়োজন এবং এর পরে ঢাকায় ও ঢাকার বাইরে এমন আলোচনা ও প্রশিক্ষণ আয়োজিত হবে। সংলাপের সঞ্চালনা করেন সিজিএসের নির্বাহী পরিচালক জিল্লুর রহমান।