মা হওয়ার আধঘণ্টা পর এইচএসসি পরীক্ষা দিয়েছে কিশোরগঞ্জের ভৈরবের উচ্চ মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থী রেশমা বেগম। নবজাতক জন্মদানের পর প্রসব বেদনা আর সন্তান জন্মদানের কষ্ট তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। সেই অদম্য নারী ভৈরব পৌর শহরের চণ্ডীবের এলাকার মো. শান্ত মিয়ার স্ত্রী। সে সরকারি জিল্লুর রহমান মহিলা কলেজের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী।
জানা গেছে, আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে প্রসব ব্যথা নিয়ে গেলে সেখানে কর্তব্যরত জরুরি প্রসূতি টিম ওই শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক পদ্ধতিতে (নরমাল ডেলিভারি) বাচ্চা প্রসব করান। তখন মা ও তার নবজাতক দুজনই সুস্থ ছিলেন।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. খুরশীদ আলম বলেন, ‘প্রসব বেদনা নিয়ে আজ সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রসূতি বিভাগে ভর্তি হন রেশমা বেগম নামের এক সন্তানসম্ভবা নারী। পরে সকাল সাড়ে ৮টায় জন্মদান করেন এক সুস্থ সবল নবজাতক। কিন্তু আজ ছিল তার এইচএসসি পরীক্ষার সমাজকল্যাণ বিষয়ের শেষ পরীক্ষা। তাই নবজাতক জন্মদানের পর প্রসব বেদনা আর সন্তান জন্মদানের কষ্ট তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। স্বল্প সময়েই নিজেকে প্রস্তুত করে ছুটে গেছেন তার নির্ধারিত পরীক্ষা কেন্দ্রে।
জানতে চাইলে পরীক্ষার্থী রেশমার স্বামী মো. শান্ত বলেন, ‘আমার স্ত্রী গর্ভবতী অবস্থায় এ বছর এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আজ ছিল তার শেষ পরীক্ষা। কিন্তু সকালে তার প্রসব ব্যথা শুরু হয়। পরে তাৎক্ষণিক উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে আসি। পরীক্ষার আধঘণ্টা আগে সন্তান জন্মদান করে আমার স্ত্রী তার শেষ পরীক্ষায় অংশ নিতে নির্ধারিত কেন্দ্রে ছুটে যান। পরীক্ষা শেষে হাসপাতালে ফিরে এসে তার নবজাতক শিশুকে বুকে জুড়িয়ে ধরেন।’