ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্য (২৫) দুর্বৃত্তের ছুরিকাঘাতে নিহত হওয়ার ঘটনায় বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। সমাবেশে উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি করা হয়।
আজ বুধবার রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল শুরু করে কলাভবন প্রদক্ষিণ করে সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে সমাবেশ করেন।
সমাবেশে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে উপাচার্য এই হত্যার দায় এড়াতে পারেন না। অভ্যুত্থান-পরবর্তী দুটি ঘটনা প্রমাণ করে তিনি চরমভাবে ব্যর্থ। আমরা প্রক্টর ও ভিসির পদত্যাগ দাবি করছি। একইসঙ্গে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টারও পদত্যাগ দাবি করছি, কারণ পারভেজ নামের এক প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীও একইভাবে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন। যার ফলে দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ‘পাঁচ আগস্টের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে যে প্রশাসন গঠন হয়েছিল, তা শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। ফজলুল হক মুসলিম হলে এক মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে হত্যার ধারাবাহিকতায় সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে বলে আমাদের আশঙ্কা। টিএসসি এলাকায় ফ্যাসিস্টবিরোধী গ্রাফিতিতে জুতা নিক্ষেপের চিত্র মুছে ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে হামলা, পহেলা বৈশাখে আগুন লাগানোসহ একাধিক ঘটনায় শিক্ষার্থীরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মাদকসেবীদের আড্ডায় পরিণত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় মাদকের যে বিস্তার রয়েছে, তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখিনি। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবি ছিল। আজও সে দাবি অপরিবর্তিত। আমরা আমাদের ভাই সাম্যকে হারিয়েছি, কিন্তু চাই না ভবিষ্যতে আর কেউ এমন ঘটনার শিকার হোক।’
বক্তারা সাম্য হত্যাকে পরিকল্পিত দাবি করে তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।
গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এলাকায় ছুরিকাঘাতে নিহত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্য। তিনি স্যার এ এফ রহমান হল শাখা ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী ছিলেন। তাঁর বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানায়।