ভ্যাপসা গরমের মাঝে রাজধানীতে স্বস্তির বৃষ্টিতে বিমানবন্দর সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চলাচলরত জনসাধারণকে। আবার তীব্র যানজটে কোনো কোনো গাড়ি চালককে সড়কে গাড়ি বন্ধ করে ড্রাইভিং সিটেই ঘুমিয়ে থাকতে দেখা গেছে।
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে বনানী পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার রাস্তার উভয় পাশে আজ রোববার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত এ যানজটের সৃষ্টি হয়।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, ঢাকার প্রবেশ পথ গাজীপুরের টঙ্গী স্টেশন রোড, টঙ্গী বাজার, আব্দুল্লাহপুর, উত্তরা, এয়ারপোর্ট, খিলক্ষেত, বিশ্ব রোড, কুড়িল, প্রগতি সরণি এবং বনানী পর্যন্ত তীব্র যানজট রয়েছে। আবার ঢাকা থেকে বের হওয়ার এই পথের অবস্থাও একই। যানজটের কারণে দীর্ঘ সময় এক জায়গায় গাড়ি অনড় থাকতে দেখা যায়। আবার কিছুক্ষণ পর পর গাড়ি থেমে থেমে চলছে। যার ফলে কাছের গন্তব্যের লোকজন পায়ে হেঁটেই নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হয়েছে।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে কর্মরত রয়েছেন রনি। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আজমপুরে এসে বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য বাসে উঠেছিলাম। কিন্তু যানজটের কারণে দেখি গাড়িই নড়ে না। যার ফলে বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটেই বিমানবন্দরে এসেছি।’
গাজীপুরের বাসিন্দা ও শিক্ষার্থী আল আমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কলেজে যাওয়ার জন্য সকালে বাসা থেকে বের হয়েছি। কিন্তু টঙ্গী থেকে বনানী পর্যন্ত তীব্র যানজটে পরে থাকতে হয়েছে। টঙ্গী থেকে বিমানবন্দর সড়ক পাড়ি দিয়ে লেগেছে প্রায় দুই ঘণ্টা। অথচ সাধারণ এ সড়ক পাড়ি দিতে সময় লাগত সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিট।’
আশুলিয়া থেকে অ্যাম্বুলেন্স করে অসুস্থ স্বজনকে নিয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে যাচ্ছিলেন মিজানুর রহমান। বিমানবন্দরে যানজটে আটকা থাকা অবস্থায় মিজান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা। এমনিতে একজন অসুস্থ অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে আছেন, এর মাঝে যুক্ত হয়েছে যানজট। তাকে জরুরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া দরকার। কিন্তু যানজটের কারণে গাড়ি যেন সামনেই যাচ্ছে না।’
দক্ষিণখানের ব্যবসায়ী আজমত উল্লাহ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘উন্নয়নের জন্য বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) কাজ বছরের পর বছর ধরে চলছে। যানজট নিরসনের জন্য এ কাজ চললেও এটিই এখন গলার কাটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর জন্য মহাসড়কে খানাখন্দের তৈরি হয়েছে। আর জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। যা দেখার কেউ নাই।’
মহাসড়কের উত্তরা এলাকায় দেখা যায়, একজন বাস চালক গাড়ি বন্ধ করে ড্রাইভিং সিটেই বিছানা পেতে ঘুমিয়ে রয়েছেন। রুবেল নামের ওই ড্রাইভার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে ঠান্ডা আবহাওয়া। আবার সড়কে তীব্র যানজট। যার কারণে প্রায় সব যাত্রীই গাড়ি থেকে নেমে গেছেন। এদিকে দীর্ঘ সময় যানজটে থাকতে থাকতে চোখে ঝিম এসে গিয়েছিল।’
এদিকে ডিএমপির ট্রাফিক পুলিশের উত্তরা বিভাগে কর্মরত একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিআরটি কাজের জন্য সড়কের অনেক জায়গায় সরু হয়ে গেছে। আবার অনেক জায়গায় খোঁড়াখুঁড়ির কারণে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। এসব খানাখন্দ বৃষ্টির পানি জমে ঝুঁকির সৃষ্টি হয়েছে। ফলে সড়কের চলাচলকারী পরিবহনগুলো ঠিক গতিতে চলাচল করতে পারছে না।
খাদেমুল বলেন, ‘বৃষ্টি হলেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে যায়। আকাশে মেঘ জমছে, আর আমাদের কলিজায় পানি থাকছে না।’