পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীরা নিজেদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামের জাতিগোষ্ঠীরা দেখিয়েছেন কীভাবে সংস্কৃতি ধরে রাখতে হয়। কিন্তু আমরা (বাঙালি) একদিকে সংস্কৃতির কথা বলছি, অন্যদিকে বার্গার ও স্যান্ডউইচ ছাড়া খাচ্ছি না। এর ফলে আমরা নিজেদের খাদ্যব্যবস্থা নষ্ট করে ফেলেছি।’
আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর মিরপুরে শাক্যমুনি বৌদ্ধবিহারে বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান ও বিষু মেলা-২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, ‘আপনারা (পাহাড়ি জাতিগোষ্ঠী) নিজেদের খাদ্য রক্ষা করে চলছেন, এতগুণ, প্রতিভা, ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জাতি হিসেবে আপনারা কেন পিছিয়ে থাকবেন। তবে পিছিয়ে থাকার জন্য বৈষম্যভিত্তিক সমাজ, রাষ্ট্র ও চিন্তাভাবনাই দায়ী ছিল।’
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা বলেন, ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ করে আমরা নিজেদের মুখ্য করেছি, এতে অন্যদের প্রতি অবহেলা ও অবিচার করা হয়েছে। সবাই এ দেশের মানুষ, সমান অধিকার নিয়ে সবাই বেঁচে থাকতে চায়। এখানে কোনো প্রকার বৈষম্য হতে পারে না।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘মানুষ হিসেবে, দেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের প্রত্যেকের অধিকার সমান। এখানে কোনো মানুষের অধিকার আলাদা হতে পারে না। এ কথা বলার পরিবেশ পেয়েছি, কারণ, এ প্রজন্ম কীভাবে অধিকার আদায় করতে হয়, তা আমাদের শিখিয়েছে।’
ঢাকা বিঝু, বৈসু, সাংগ্রাই, চাংক্রান ও বিষু মেলা উদ্যাপন কমিটি-২০২৫–এর আহ্বায়ক শুভাশীষ চাকমার সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা, সিএইচটি ওয়েলফেয়ার সোসাইটির আহ্বায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) তুষার কান্তি চাকমা, গণপূর্ত অধিদপ্তরের অবসারপ্রাপ্ত অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী কুবলেশ্বর ত্রিপুরা, সোশ্যাল অ্যাক্টিভিস্ট রুপাইয়া তঞ্চঙ্গ্যা প্রমুখ।
উল্লেখ্য, বাংলা চৈত্র মাসের শেষ দুই দিন ও বৈশাখের প্রথম দিন পাহাড়ে শুরু হয় বর্ষবিদায় ও বরণের বর্ণিল আয়োজন। একেক জাতিগোষ্ঠী একেক নামে এ উৎসবকে অভিহিত করে। এবার উৎসব শুরু হবে ১২ থেকে ১৪ এপ্রিল। সেই উৎসব উপলক্ষেই রাজধানীতে মেলার এই আয়োজন।