অনিয়ম, আর্থিক দুর্নীতি ও ঘুষ নেওয়ার গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের পর এবার কর্মকর্তা নিয়োগ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
দুদকের ওই কর্মকর্তা জানান, দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আশিকুর রহমানের নেতৃত্বে দুই সদস্যের একটি টিম গঠন করেছে দুদক। টিমের অপর সদস্য দুদকের উপসহকারী পরিচালক সুবিমল চাকমা।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুদকের দৈনিক ও সাম্প্রতিক অভিযোগ সেল থেকে পরিচালক ঈশিতা রনি স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে ডিএনসিসি প্রশাসক এজাজের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
অনুসন্ধান শুরুর বিষয়ে দুদকের চিঠিতে বলা হয়, ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের নামে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নানাবিধ আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি ও ঘুষ নেওয়ায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগগুলো প্রাথমিকভাবে গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে অনুসন্ধান শাখাকে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এর আগে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন এলাকায় কোরবানির ঈদে গরুর হাট ইজারাপ্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতি, দরপত্র জালিয়াতি, প্রভাবশালী মহলের হস্তক্ষেপ, ইজারাদারদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া, হাটের খরচ দেখিয়ে ভুয়া বিল-ভাউচার তৈরিসহ নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। এসব অনিয়ম থেকে অর্জিত অর্থের বড় অংশ নগর সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের কিছু কর্মকর্তার মাধ্যমে বণ্টন করা হয়ে থাকে।
দুদকের চিঠিতে বলা হয়েছে, অভিযোগগুলো যথেষ্ট গুরুতর হওয়ায় প্রশাসকের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অনুসন্ধান টিম গঠন করে নথিপত্র, নীতিমালা, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের ভূমিকা ও আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে বিস্তারিতভাবে যাচাই করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে অনিয়মের প্রমাণ মিললে এজাজসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এরই অংশ হিসেবে দুদক কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছে।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক হিসেবে মোহাম্মদ এজাজকে নিয়োগ দেওয়া হয়। মেয়র নির্বাচনের আগপর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্ব পরিচালনার অংশ হিসেবে তাঁকে এই পদে বসানো হয়। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শহরের বিভিন্ন খাতের অনুমোদন, ইজারা, লাইসেন্স নবায়ন ও বাজার ব্যবস্থাপনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। বিশেষ করে, হাট ইজারাসংক্রান্ত বিভাগের ওপর তাঁর সরাসরি নিয়ন্ত্রণ থাকার কারণে অভিযোগগুলো গুরুত্ব পায়।