বড় বড় উৎসব ঘিরে রাজধানীতে ফানুস ওড়ানো ও আতশবাজি নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সম্প্রতি ইংরেজি নববর্ষবরণ অনুষ্ঠানকে ঘিরে আতশবাজি ফোটানো ও ফানুস ওড়ানোকে কেন্দ্র করে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই সময় রাজধানীর অন্তত ১০টি স্থানে আগুন এবং এক শিশুর অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর খবর গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে উঠে এসেছে।
বর্ষবরণের রাতে স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রে (ক্যাপস) গবেষণায় অন্য সময়ের তুলনায় ৭৮ শতাংশ বেশি শব্দ ও ৩৩ শতাংশ বেশি বায়ু দূষণের তথ্য উঠে এসেছে। যা সবদিক থেকে মানুষ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য ক্ষতিকর। তাই আসন্ন সাকরাইন উৎসবসহ সব ধরনের উৎসবে বাজি, শব্দ ও বায়ুদূষণকারী কার্যক্রম নিষিদ্ধের দাবি জানিয়েছে ক্যাপস।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যাপস-এর প্রধান এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের বিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সাকরাইন ঢাকার একটি ঐতিহ্যবাহী উৎসব। ঘুড়ি ওড়ানোর পাশাপাশি এই উৎসবে ফানুস ওড়ানো এবং আতশবাজি ফোটানোসহ শব্দ ও বায়ু দূষণকারী নানান কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এটি দেশের প্রচলিত পরিবেশ সংরক্ষণ আইন এবং শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালায় সুস্পষ্ট অপরাধ হলেও দূষণ নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কোনো তৎপরতা নেই।’
আতশবাজি উৎসবকে সন্ত্রাসের পর্যায়ে নিয়ে গেছে জানিয়ে কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, ‘অযথা শব্দ ও বায়ু দূষণ করা আইনত নিষিদ্ধ থাকার পরও প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে গত ৩১ ডিসেম্বর থার্টিফাস্ট নাইট এবং বর্ষবরণে এটি অতিরিক্ত মাত্রায় ছিল। যা উৎসবকে সন্ত্রাসের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। এতে ভীত হয়ে একটি শিশুর প্রাণ ঝরেছে, আগুনে সর্বস্ব হরিয়েছে অনেকে।’
গত ৫ বছর ধরে জাতীয় উৎসবকেন্দ্রীক শব্দ ও বায়ুদূষণ পর্যবেক্ষণ করে আসছে ক্যাপস। শব্দ ও বায়ু দূষণের আশঙ্কায় সাকরাইন উৎসবের আগেই আতশবাজি ফোটানো এবং ফানুস ওড়ানো বন্ধের দাবি জানিয়েছে বাযুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র (ক্যাপস)। একই সঙ্গে অন্তত জনস্বাস্থ্যের বিবেচনায় বিয়ে অনুষ্ঠানসহ সব ধরনের উৎসবে আতশবাজি ফোটানো নিষিদ্ধ ঘোষণা করে এর ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি পরিবেশবাদী সংস্থাটির।