হোম > সারা দেশ > ঢাকা

পাখিও তো গান গায়, পাখির নীড় ভাঙবে কবে—সংস্কৃতিকর্মীর জিজ্ঞাসা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎

আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ সমাবেশ করেন সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানটির কর্মী ও সদস্যরা। ছবি: আজকের পত্রিকা

‘মানুষ গান গায়, তাই তাঁর ঘর ভাঙো, বাড়ি ভাঙো, ইশকুল ভাঙো। পাখিও তো গান গায়...পাখির নীড় ভাঙবে কবে?’—এমন প্রশ্ন করেছেন বিপ্লব নামের একজন সংস্কৃতিকর্মী। আজ মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনের সামনে সংস্কৃতির ওপর আক্রমণের প্রতিবাদে সমাবেশে এ কথা বলেন তিনি।

সংস্কৃতিকর্মী বিপ্লব বলেন, ‘‘মানুষ গান গায়, তাই তাঁর ঘর ভাঙো, বাড়ি ভাঙো, ইশকুল ভাঙো। পাখিও তো গান গায়...পাখির নীড় ভাঙবে কবে?’’ আমি এই লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়েছি। কারণ, মানুষের গান গাওয়াতে যদি ঘরবাড়ি ভাঙা হয়, তার মানে পাখিরাও তো গান গায়, তাই বলে তাদের বাড়িও ভাঙতে হবে? এই অসভ্যতা আমরা এই দেশে চাই না। আমরা এর প্রতিকার চাই।’

আজ মঙ্গলবার বিকেলে গানে গানে সংহতি সমাবেশের আয়োজনের মাধ্যমে সংস্কৃতি স্থাপনার ওপর আক্রমণের প্রতিবাদ জানানো হয়। প্রতিবাদ ও সংহতি সমাবেশে এক হাজারের বেশি মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানিয়েছেন সংস্কৃতিকর্মী পার্থ তানভীর।

প্রতিবাদী সংহতি সমাবেশে ‘চল চল চল! ঊর্ধ্ব গগনে বাজে মাদল’, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চলো রে’, ‘মানুষ ছাড়া ক্ষ্যাপা রে তুই মূল হারাবি’, ‘তীরহারা এই ঢেউয়ের সাগর পাড়ি দেবো রে’, ‘আগে কী সুন্দর দিন কাটাইতাম আমরা’, ‘মোরা ঝঞ্ঝার মতো উদ্দাম, মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল, মোরা বিধাতার মতো নির্ভয়, মোরা প্রকৃতির মতো সচ্ছল’, ‘মানুষ হ, মানুষ হ, আবার তোরা মানুষ হ’-সহ নানান গান গাওয়া হয়। এরপরে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাপ্তি করা হয় সংহতি সমাবেশ।

ছায়ানটের সাধারণ সম্পাদক সংগীতশিল্পী লাইসা আহমদ লিসা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের কথা খুবই স্পষ্ট, এ ধরনের আক্রমণের আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এর আগেও আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি, আজও জানালাম। আমাদের সংস্কৃতিচর্চার পথে কোনো বাধা আমরা মানি না। আমরা আমাদের কাজ করে যাব এবং আশা রাখি, আপনাদের মতো মিডিয়া থেকে শুরু করে সারা দেশের মানুষ আমাদের সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন। আমাদের যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন রাখবই, আপনাদের সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে চলবই। সকলের মঙ্গল হোক।’

ছায়ানট ভবন আক্রান্ত হওয়ার প্রতিবাদে দেশের শিল্পী-সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি অনুরাগী যাঁরা আজকের সংহতি সমাবেশে যোগদান করেছেন, তাঁদের ধন্যবাদ জানিয়ে ছায়ানট সভাপতি সারওয়ার আলী বলেন, ‘উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী ও সাম্প্রতিককালে দেশের বাউলসমাজের ওপরও একটি মহল সহিংস আক্রমণ চালিয়েছে। সেই সঙ্গে তারা বিভ্রান্তিকর অপপ্রচার চালিয়ে আবহমান বাংলার সংস্কৃতিচর্চা থেকে আমাদের নিবৃত্ত করতে উদ্যত। এসব কর্মকাণ্ড বাঙালি জাতিসত্তা ও সংস্কৃতির ওপরে আঘাত হানছে।’

ছায়ানট সভাপতি আরও বলেন, ‘গণমাধ্যমের ওপর বেপরোয়া আক্রমণ এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে চলা শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত নিরপরাধ হত্যা দেশবাসীর নিরাপত্তা বিপন্ন করছে। এমন পরিস্থিতিতে আমাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্য কর্মোদ্যোগ গ্রহণ জাতিসত্তা ও সংস্কৃতি সুরক্ষায় সমাজকে সক্রিয় করে তুলবে। নিরাপত্তাহীনতার অবসান ঘটুক। বাঙালির সংস্কৃতির যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন হোক। দেশে ও বিদেশের যে অগণিত মানুষ আমাদের প্রতিবাদের প্রতি সংহতি জানিয়েছেন, ছায়ানট তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।’

সংস্কৃতিকর্মী হামিন আহমেদ বলেন, ‘চাপিয়ে দেওয়ার মতবাদ কখনো গ্রহণ করিনি আর করবও না। আমাদের সংস্কৃতি ব্যাহত করতে কেউ পারবে না।’

শিরোনামহীন ব্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান জিয়া বলেন, ‘সংস্কৃতির ওপর আগ্রাসন মানব না। শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে চাই। দরকার হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল রোডম্যাপ দিক—সংস্কৃতি কীভাবে চলবে সেই ব্যাপারে। কেউ যদি সংস্কৃতি বন্ধ করে দিতে চায়, সেটাও বলুক। কিন্তু এমন আক্রমণ মানা হবে না।’

সংস্কৃতিকর্মী সম্রাট বলেন, ‘আমরা আর্টিস্ট যারা আছি, আমরা চাই স্বাধীনতা। আর্ট করার মতো স্বাধীনতা চাই। আমরা যাতে বাধাবিপত্তি ছাড়াই করতে পারি, সেটাই চাই।’

সংস্কৃতিকর্মী বান্টি বলেন, ‘গানের মাধ্যমে আমরা প্রতিবাদ জানিয়েছি। সব সময় বাঙালিরা প্রতিবাদ জানাই। সেটা বাদ্যযন্ত্রের মাধ্যমে। খুব কমসংখ্যক মানুষ শান্তি চায় না, তারাই এগুলো আক্রমণ করে।’

সংস্কৃতিকর্মী ইতি গোমস্তা বলেন, ‘এই ন্যক্কারজনক ঘটনায় আমরা ব্যথিত হয়েছি। আমরা কোনো ধরনের অন্যায় আপস করি না, অন্যায়মূলক কাজও করি না। তাই সামনে অন্যায় কাজ হলে প্রতিবাদ করেই যাব।’

বাঙালি সংস্কৃতিচর্চার অন্যতম প্রধান বাতিঘর এই ‘ছায়ানটে’ গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) গভীর রাতে একদল উন্মত্ত জনতা রাজধানীর ধানমন্ডির শংকর এলাকায় অবস্থিত ছায়ানট সংস্কৃতি ভবনে ভয়াবহ হামলা, ভাঙচুর, অগ্নিকাণ্ড ও লুটপাট চালায়। অসাম্প্রদায়িক চেতনার ধারক এই প্রতিষ্ঠানের ওপর এমন আঘাত দেশের সাংস্কৃতিক ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।

ওই আক্রমণের ঘটনায় গত শুক্রবার ৩০০ থেকে ৩৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধানমন্ডি থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলাটি করেন ছায়ানটের প্রধান ব্যবস্থাপক দুলাল ঘোষ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১০ কিলোমিটার যানজট

মগবাজারে ককটেল বিস্ফোরণে নিহতের মরদেহ ঢামেক মর্গে

মণিপুরীদের জীবনধারার আলোকচিত্র প্রদর্শনীর সময় বাড়ল

চীন নিয়ে প্রতিবেদনের জন্য পুরস্কার পেলেন ২৯ সাংবাদিক

গণমাধ্যম ও সংস্কৃতি অঙ্গনে হামলা পরিকল্পিত মতাদর্শিক সন্ত্রাস: আনু মুহাম্মদ

প্রথম আলো-ডেইলি স্টারে হামলা: গ্রেপ্তার আরও ৩, ডিআরইউর মানববন্ধন

তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন ঘিরে ৩০০ ফুটে নেতা-কর্মীদের ভিড়

রাজধানীর মগবাজারে ‘ককটেল’ বিস্ফোরণে যুবক নিহত

হাদি হত্যা: ফয়সালকে সীমান্তে আত্মগোপনে সহায়তাকারী ৫ দিনের রিমান্ডে

বিমানবন্দর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের ঢাকায় প্রবেশের পথ ৪ ঘণ্টা টোলমুক্ত থাকবে আগামীকাল