ঘুষ গ্রহণ, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচার আইনে করা মামলায় সাবেক ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিকের আট বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক শেখ নাজমুল আলম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে পার্থ গোপাল বণিককে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে পার্থ গোপালের থেকে উদ্ধার করা ৮০ লাখ টাকার মধ্যে ৬৫ লাখ টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদ অর্জনের দায়ে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধে আইনের ৫(২) ধারায় তিন বছর ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুদক আইনের ২৭(১) ধারায় পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেন।
আসামি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে গত ২৭ ডিসেম্বর এই রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়।
মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৫-এ বিচারাধীন ছিল। ওই আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন গত ১৭ জুন পার্থ গোপালকে জামিন দেন। রাতের অন্ধকারে জামিন দেওয়া নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। পরে হাইকোর্ট জামিন বাতিল করেন। জামিন প্রদানকারী বিচারককে হাইকোর্টে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। এরপর তিনি জামিন দেওয়া ভুল হয়েছে স্বীকার করে হাইকোর্টের কাছে ক্ষমা চান। পরে মামলাটি বিচারের জন্য বিশেষ জজ আদালত-৪-এ স্থানান্তর করা হয়। এরপর মামলার বাকি সাক্ষ্য গ্রহণ করে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে এ মামলার রায়ের তারিখ ধার্য করা হয়। গত বছরের ৪ নভেম্বর পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত। এরপর ১৫ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। একই বছরের ২৪ আগস্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক মো. সালাহউদ্দিন ডিআইজি পার্থের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেন। এতে মোট ১৪ জনকে সাক্ষী করা হয়। রাজধানীর নর্থ রোডের ফ্ল্যাট থেকে ৮০ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় বরখাস্ত ডিআইজি প্রিজনস পার্থ গোপাল বণিকের বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিল দুদক।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, পার্থ গোপাল বণিকের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া ৮০ লাখ টাকার কোনো বৈধ উৎস তিনি দেখাতে পারেননি। অর্থাৎ তিনি সরকারি দায়িত্ব পালনের সময় বিভিন্ন অনিয়ম, ঘুষ, দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৮০ লাখ টাকা উপার্জন করে পাচারের উদ্দেশ্যে বাসায় লুকিয়ে রেখেছিলেন বলে প্রমাণিত হয়।