হোম > সারা দেশ > ঢাকা

নিটিং অপারেটর কীভাবে গেলেন সেপটিক ট্যাংকে? 

রিফাত মেহেদী, সাভার (ঢাকা)

‘আমার স্বামী তো অপারেটর ছিল। সে মেশিন চালায়, সে কীভাবে সেপটিক ট্যাংকে গেল? কেন নামাল তাকে? আমি কি নিয়ে সংসার করব? আমি কি নিয়ে থাকব? আমি এর বিচার চাই।’ আহাজারি করতে করতে এসব কথা বলছিলেন সেপটিক ট্যাংকে নিহত পোশাক শ্রমিক রাকিবের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার।

আশুলিয়ায় স্বামীর দুর্ঘটনার খবর শুনে ছুটে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় মোট তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় আশুলিয়ার শিমুলতলা দরগারপাড় এলাকার আল রহমান নিট ফ্যাশনস (বিডি) লিমিটেড নামের পোশাক কারখানার সেপটিক ট্যাংক থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।

নিহতরা হলেন—খুলনা জেলার বটিয়াঘাট থানার বুনারবাদ গ্রামের নুর ইসলাম শিকদারের ছেলে মো. রাকিব (২২) এবং রংপুর জেলার গাংগাচড়া থানার ফেরদৌস রহমানের ছেলে মোহাম্মদ আলী (২৭)। তাঁরা দুজনেই কারখানার শ্রমিক। অন্যদিকে এ ঘটনায় নিহত হন স্থানীয় পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর থানার খাগালিয়া গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে মো. মিঠু (২২)।

মাত্র দেড় বছর আগে তাঁদের বিয়ে হয়েছিল জানিয়ে রাকিব স্ত্রী বৃষ্টির আক্তার বলেন, ‘আমি শুনেছি কি যেন হয়েছে, রাকিবকে হাসপাতালে নিতে হবে? এসে দেখি এই অবস্থা। ও তো অপারেটর ছিল? ও কীভাবে সেখানে গেল? সে আজকে (বুধবার) অফিসে আসতে চায় নাই। বাসাতেই ছিল, ৪ টার সময় ডেকে আনছে তাকে। কেন ওকে নামাল? আমি এর বিচার চাই।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, বুধবার বিকেল ৩টার দিকে প্রথমে পরিচ্ছন্নতাকর্মী মিঠু ওই সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার করতে নামেন। ঘণ্টাখানেক পরেও তাঁর কোনো সাড়াশব্দ না পেলে প্রথমে রাকিব ও পরে মোহাম্মদ আলী নামেন। পরে তিনজনেরই কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে তাঁরা রাত ৮টা ১০ মিনিটের দিকে এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে সাড়ে ৯টার দিকে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য লীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. সরোয়ার হোসেন বলেন, ‘এই ঘটনা হত্যাকাণ্ড ছাড়া আর কিছুই না। এই কারখানা মালিক ও জড়িত সকলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। ঘটনার শুরু বিকেলে আর ফায়ার সার্ভিসকে জানানো হলো রাতে। কেন? কেন এই তিনটি জীবন নিয়ে এভাবে উপহাস করা হলো? এ ছাড়া নিটিং অপারেটর যারা তাদের তো সেখানে নামানোর প্রশ্নই ওঠে না।’ 

এ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক (জোন-৪) মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘আমরা তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। সেপটিক ট্যাংকের ভেতর কার্বন মনো অক্সাইড ও হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাস জমা থাকে। সে জন্য কেউ যদি নামে সে তাৎক্ষণিক মারা যাবে। এখানেও সেই বিষয়টিই ঘটেছে। প্রায়ই সেপটিক ট্যাংকগুলোতে এমন দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের আরও সতর্ক হতে হবে।’

কারখানাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ শামীমের মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘আমি গত ৭ দিন ধরে চট্টগ্রামে আছি। আমি তো বলেছি শ্রমিকদের পরিবারের দায়িত্ব নিব। ঘটনার পর থেকে কারখানার সবাই পালিয়ে গেছে, কেউ ফোন ধরছে না। আমি তো ছিলাম না সেখানে। আমি শনি-রোববারের দিকে আসব। আমি এখন নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত আছি। পরে কথা বলব।’ 

আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুব্রত রায় বলেন, ‘নিহতদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে। তদন্ত করেই সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকেই ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।’

সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে আশুলিয়ার শিমুলতলা এলাকায় বাইপাইল-আব্দুল্লাহপুর মহাসড়কের পাশে বিক্ষোভ মিছিল করে সাভার আশুলিয়ার শ্রমিক সংগঠনসমূহ। অপরিকল্পিতভাবে কারখানা পরিচালনার কারণে দোষী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তারা।

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

হাদির জানাজা ঘিরে যান চলাচল নিয়ে ডিএমপির নির্দেশনা

তোপখানায় উদীচীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আগুন

হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়েছে, রাখা হবে হিমঘরে

হাদির জানাজা আগামীকাল বেলা আড়াইটায়, জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায়

‎হাদি হত্যার বিচার দাবিতে জবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ মিছিল

বাংলাদেশ হেলথ রিপোর্টার্স ফোরামের নতুন কমিটি

প্রথম আলোর কার্যালয়ের সামনে কর্মীদের মানববন্ধন

হাদির হত্যাকাণ্ডকে ‘ব্যবহার করে’ উচ্ছৃঙ্খলতার নিন্দা গণতান্ত্রিক সংস্কার জোটের

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শন আইজিপির