ডিসেম্বরের মধ্যে নবম পে কমিশনের প্রতিবেদন ও তা বাস্তবায়নের দাবি করলেন সরকারি কর্মচারীরা। বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী দাবি আদায় ঐক্য পরিষদের ঘোষিত ৫ ডিসেম্বরের মহাসমাবেশ সফলভাবে বাস্তবায়ন করারও আশা প্রকাশ করেছেন তাঁরা।
আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে এক মতবিনিময় সভায় বক্তাদের কথায় এ বিষয়গুলো উঠে আসে। নবম পে কমিশনের বাস্তবায়ন এগিয়ে নেওয়ার দাবিতে এ সভার আয়োজন করে ‘বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদ’।
বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের সভাপতি এম এ হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং বিলসের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ। প্রধান আলোচক ছিলেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জামান রতন। তিনি বলেন, বর্তমানে সরকার যুক্তির ওপরে নয়, শক্তির ওপরে নির্ভর করে। দাবি আদায়ের জন্য শক্তি প্রয়োগ করতে হয়, শক্তি না থাকলে নিপীড়ন ভোগ করতে হয়। সরকার যদি যুক্তি না মেনে কর্মচারীদের শক্তি প্রয়োগে বাধ্য করে, তবে তাঁরা প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির দায়ে অভিযুক্ত হন।
রতন বলেন, ‘সরকারের হিসাব অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রতিবছর মূল্যস্ফীতি হয় ১০ শতাংশের ওপরে। কখনো ১১ বা ১২ শতাংশ। সর্বনিম্ন মূল্যস্ফীতি হলো ৮.৫ শতাংশ। সরকারি কর্মচারীদের বার্ষিক ইনক্রিমেন্টের হার হলো ৫ শতাংশ। এর ফলে একজন সরকারি কর্মচারী প্রতিবছর কমপক্ষে ৩.৫ শতাংশ করে প্রকৃত বেতন হারান।’
সরকারি কর্মচারীদের আন্দোলনে যাওয়াটা রাষ্ট্রের ব্যর্থতা উল্লেখ করে রতন বলেন, পাঁচ বছর পরপর তো বটেই, প্রতিবছরই বাজারদরের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ করে বেতনকাঠামোটা পুনর্বিন্যাস করা উচিত। এটা চাইতে হবে কেন?
শ্রম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান এবং শ্রমবিষয়ক গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের (বিলস) নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সুলতান উদ্দিন আহমেদ স্থায়ী পে কমিশন ও জাতীয় ন্যূনতম মজুরি প্রতিষ্ঠার তাগিদ দেন। তাঁর মতে, সব শ্রমিক-কর্মচারীকে একত্র করে আন্দোলন করা উচিত। সুলতান উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীদের বেতনের ফয়সালা শুধু তাঁদের জন্য নয়, বরং সারা দেশের মজুরির একটা মানদণ্ড ঠিক করা দরকার।...পে স্কেল কবে বাস্তবায়ন হবে, তার চেয়ে জরুরি হলো, এটি কী মানদণ্ডে তৈরি হবে। পে স্কেল অবশ্যই একজন মানুষের মর্যাদাকর জীবনযাপনের উপযুক্ত হতে হবে।’
মতবিনিময় সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল খালেক, বাংলাদেশ সরকারি কর্মচারী সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব মো. বেল্লাল হোসেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাস্তবায়ন ঐক্য পরিষদের সভাপতি আবু নাসির খান, সমন্বয় পরিষদের কার্যকরী সভাপতি জাকির হোসেন প্রমুখ।