গাজীপুরের টঙ্গীতে জিজে ক্যাপস অ্যান্ড হেডওয়্যার লিমিটেড নামে টুপি তৈরির কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। পঞ্চম তলার যে ফ্লোরে আগুন লাগে সেখানে থাকা প্রায় সবকিছুই পুড়ে গেছে। তবে এখনই অগ্নিকাণ্ডের কারণ বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানাতে পারছেন না ফায়ার সার্ভিস।
এদিকে কারখানাটিতে দিনভর চলছিল শ্রমিকদের বিক্ষোভ। শ্রমিকদের বেতন, ওভারটাইমের মজুরি না দিয়ে কারখানা বন্ধের খবর ছড়িয়ে পড়লে রোববার (৭ মে) দুপুর থেকেই কারখানার ভেতরে শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন করেন।
কারখানার শ্রমিকেরা জানান, রোববার সকাল থেকে বেতন ভাতা, ওভারটাইমের মজুরিসহ কয়েকটি দাবি নিয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা চলছিল। কর্তৃপক্ষ দাবি মেনে না নিলে শ্রমিকেরা কাজ বন্ধ করে করে কারখানাটির প্রধান ফটকে অবস্থান নেন। শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে পুলিশ কারখানায় উপস্থিত হয়। এ সময় শ্রমিকেরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাউন্ড গ্রেনেড ও লাঠিচার্জ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এরই কয়েক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে ৯টার দিকে কারখানাটির পাঁচতলায় আগুন লাগে।
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘কারখানা ভবনটির সেফটি ইকুইপমেন্টগুলোতে সমস্যা রয়েছে। বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখব। কারখানায় পর্যাপ্ত পরিমাণ পানির ব্যবস্থা ছিল না। পার্শ্ববর্তী কারখানা থেকে পানি সরবরাহ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুন লাগার কারণ জানা যায়নি। তদন্ত শেষে জানা যাবে।’
শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়ে শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত উপ–পুলিশ মহাপরিদর্শক (অতিরিক্ত ডিআইজি) মাসুদ আহম্মেদ বলেন, ‘কয়েকটি দাবি জানিয়ে দিনভর কারখানাটিতে শ্রমিক অসন্তোষ চলছিল। বিকেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে শিল্প পুলিশ লাঠিচার্জ ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।’
কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পেছনে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের হাত থাকতে পারে কি না— প্রশ্নের অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, ‘তদন্ত ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না। কারখানা কর্তৃপক্ষ এখনো এ ধরনের কোনো অভিযোগ করেনি।’
কারখানাটির মানব সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান বলেন, কারখানাটিতে প্রায় ১ হাজার ৬৫০ জন শ্রমিক রয়েছে। আগুন লাগার পর শ্রমিকেরা কারখানা থেকে বেরিয়ে পড়েন।
কারখানাটির পঞ্চম তলার আগুন মুহূর্তেই ছয় ও সাত তলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। পুড়ে গেছে কারখানার মেশিন ও টুপি তৈরির কাপড় ও কারখানার আসবাবপত্র।