শোক দিবসের ফেস্টুন, পোস্টারে সংসদ সদস্যের ছবি না দেওয়ায় আবুল কাশেম নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। মাদারীপুরের কালকিনিতে মাদারীপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় আওয়ামী'লীগের দপ্তর সম্পাদক আব্দুস সোবাহান গোলাপের ছবি না দেওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। লাঞ্ছনার প্রতিবাদে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছে স্থানীয়রা।
অবরোধে সড়কে যানচলাচল বন্ধ থাকায় প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়। পরে খবর পেয়ে থানা-পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ডাসার উপজেলার কাজীবাকাই এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ও ডাসার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবুল কাশেম ব্যাংকের কাজে কালকিনি উপজেলা সদরে যান। এ সময় ৪-৫ জন দুর্বৃত্ত আবুল কাশেমকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি দেয়। এতে তাঁর পরিহিত পাঞ্জাবিও ছিঁড়ে যায়। পূর্ব শত্রুতা ও শোক দিবসের পোস্টারে এমপি আব্দুস সোবাহান গোলাপের ছবি না দেওয়ার জেরে এ হামলা হয়েছে বলে দাবি এলাকাবাসীর।
ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বলেন, আমি কালকিনি উপজেলায় গেলে বিনা অপরাধে উপজেলা তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ফরাজীর নেতৃত্বে দক্ষিণ রাজদী গ্রামের শাহ আলমসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে ফেলেছে। আমার অপরাধ, কেন আমি এমপির ছবি পোস্টারে দিইনি? আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিচারের দাবি জানাই।
এ প্রসঙ্গে ডাসার উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মতিন হাওলাদার, কৃষক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. হেমায়েত হোসেন ও কালুসহ বেশ কয়েকজন বলেন—বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেমের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার চাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি পালন করব।
অভিযোগের বিষয়ে কালকিনি উপজেলা তাঁতীলীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল ফরাজী বলেন, তাকে আমরা মারিনি। ঘটনার সময় আমি বাসায় ঘুমানো ছিলাম। আমার নামে কাশেম মিথ্যা কথা বলেছে।
এ প্রসঙ্গে মন্তব্যের জন্য সংসদ সদস্য আব্দুস সোবাহান গোলাপের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তিনি বর্তমানে ঢাকায় আছেন।
ডাসার থানার ওসি হাসানুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। আটকা পড়া সকল যানচলাচল স্বাভাবিক করে দিয়েছি।
এ ঘটনা সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, 'এ ঘটনা জানা নেই, খোঁজ নিয়ে দেখছি'।