চলচ্চিত্র অভিনেত্রী পরীমণির মুক্তির দাবিতে গতকাল শনিবার রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। বিক্ষুব্ধ নাগরিকজনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে।
বিকেল চারটায় শুরু হওয়া এই মানববন্ধনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে একাত্মতা প্রকাশ করেন লন্ডনে অবস্থানরত বিশিষ্ট সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী। চলচ্চিত্র, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষ এই মানববন্ধনে অংশ নেয়।
গত ৪ আগস্ট রাজধানীর বনানীর বাসা থেকে পরীমণিকে আটক করে র্যাব। দুই দফায় ছয় দিন রিমান্ড শেষে মাদক মামলায় গত শুক্রবার তাঁকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মানববন্ধনে পরীমণির মুক্তির দাবি জানিয়ে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, ‘পরীমণির সঙ্গে যেটা করা হয়েছে সেটা অন্যায়। নারী বলে তাঁকে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। অবিলম্বে তাঁর মুক্তির দাবি জানাই আমি।’
লেখক ও মানবাধিকারকর্মী শাশ্বতী বিপ্লব বলেন, ‘দেশে এখন নষ্ট মেয়ে বানানোর চল শুরু হয়েছে। যাঁকে যখন ভালো লাগবে না, তাঁকে তখন নষ্ট মেয়ের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটা হতে পারে না। নষ্ট মেয়ে ঠিক করা তো আপনাদের কাজ নয়। মোল্লাদের মতো কিছু কিছু সংবাদমাধ্যমও নারীদের চরিত্র হননে ব্যস্ত হয়ে গেছে। এটা বন্ধ হওয়া উচিত।’
বিক্ষুব্ধ নাগরিকজনের আহ্বায়ক ও শ্রাবণ প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী রবিন আহসান বলেন, ‘আমরা আজ শুধু পরীমণির জন্য দাঁড়াইনি, আমরা দেশের সমগ্র নারীসমাজের জন্য দাঁড়িয়েছি।’ তিনি আরও বলেন, ‘কয়েক বোতল মদের জন্য ছয় দিন রিমান্ড। অথচ গুলশান-বনানীসহ বহু জায়গায় মদ আছে, সেগুলোর খোঁজ কে রাখে? কিন্তু মদ পাওয়ায় পরীমণিকে আটকে রাখা হয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায়, এর পেছনে অন্য কিছু আছে।’
রাজনীতিবিদ বীর মুক্তিযোদ্ধা কমরেড আবুল হোসেন বলেন, ‘জাতীয় শোক দিবসের প্রাক্কালে এ ধরনের বিক্ষুব্ধ কথা বলতে হবে–এটা আমরা চিন্তা করিনি। এই সমাজ পুরুষতান্ত্রিক। পুরুষতান্ত্রিক সমাজের কাজ হলো নারীকে অবদমন করা। পরীমণির সঙ্গে সেটাই করা হচ্ছে। তাঁর ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার আছে। সরকারের কাছে আমরা সেই দাবিটুকুই জানাচ্ছি।’
সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন সাংবাদিক রঞ্জু চৌধুরী, মানবাধিকারকর্মী মুশফিকা লাইজু, নির্মাতা রাশিদ পলাশ, নির্মাতা সংগীতা ঘোষ, প্রকাশক দেলোওয়ার হোসেন, যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান মাসুম, গণজাগরণ মঞ্চের উদ্যোক্তা আকরামুল হক প্রমুখ।