গত বুধবার (১৪ মে) ‘লংমার্চ টু যমুনা’ কর্মসূচিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও মানবাধিকারকর্মীদের ওপর পুলিশি হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় হিউম্যান রাইটস সোসাইটি। আজ রোববার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস। উপস্থিত ছিলেন সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান, কার্যকরী সদস্য ওমর ফারুক শ্রাবণ, আব্দুল্লাহ আল ফারুক, কাজী মারুফসহ সংগঠনের অন্য সদস্য ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান কায়েস বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যৌক্তিক দাবিতে সেখানে গিয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তাদের ওপর অন্যায়ভাবে হামলা চালিয়েছে। আমরা এর সর্বোচ্চ বিচার চাই। ডিবি কার্যালয়ে হুসাইনকে ২৬ ঘণ্টা আটক রাখা হয়, এটি একধরনের গুম, যারও বিচার চাই। সাংবাদিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে, এসবেরও বিচার চাই।’
কার্যকরী সদস্য ওমর ফারুক শ্রাবণ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক নাগরিক ও রাজনৈতিক অধিকারসংক্রান্ত চুক্তির ১৯ ও ২১ ধারা অনুযায়ী, প্রত্যেক নাগরিকের মতপ্রকাশ ও শান্তিপূর্ণ সমাবেশের অধিকার রয়েছে। অথচ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ বর্বর হামলা চালিয়েছে। আমরা এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।’
নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, ‘আমাদের শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে, যা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। উপদেষ্টার সঙ্গে যেটা হয়েছে, তা নিন্দনীয়। কিন্তু যে ছেলেটিকে গুম করে রাখা হয়েছে, সেটা ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত রূপ। এ সংস্কৃতি আমরা চালু হতে দেব না। সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান বলেন, ‘একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্রদের ওপর এভাবে হামলা শুধু একটি ঘৃণ্য কাজই নয়, বরং এটি রাষ্ট্রের আইনশৃঙ্খলা কীভাবে পরিচালিত হয়, তা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। একটি নির্দিষ্ট দলের মিছিলে একরকম আচরণ আর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌক্তিক দাবিতে অন্য রকম আচরণ, এটি সত্যিই বেদনাদায়ক। তাদের এই হামলা আমাকে জুলাইকে মনে করিয়ে দেয়।’
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ মাসুদ বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ লংমার্চে হামলা চালিয়ে পুলিশ প্রশাসন আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে। আমরা এখনো সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিবৃতি বা দুঃখপ্রকাশ দেখিনি। আমাদের শিক্ষকদের লাঞ্ছনা করা হয়েছে—এটা মানবাধিকারের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। এসব ঘটনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।’