ফরিদপুরে পদ্মা নদীতে বালুবাহী বাল্কহেডের ধাক্কায় মাছ ধরার ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে ওই ট্রলারে থাকা দুই জেলে গুরুতর আহত হয়েছেন। তাঁদের নদীতে ভেসে থাকতে দেখে অন্য জেলেরা উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে ভর্তি করেন।
আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে পদ্মা নদীর ফরিদপুরের কবিরপুর চর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিরা হলেন মানিকগঞ্জের বারিক ফকিরের ছেলে ইউসুফ ফকির (৩০) ও মাসুদ রানার ছেলে মজিদ (২৫)।
আহতদের স্বজনেরা জানান, ওই দুই জেলে পদ্মা নদীর কবিরপুর এলাকায় মাছ ধরছিলেন। এ সময় বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে সজোরে আঘাত করে, এতে নৌকাটি দুমড়ে-মুচড়ে নদীতে তলিয়ে যায়। এ সময় ওই দুই জেলে পানিতে ছিটকে পড়ে সোলার কার্টন ধরে ভাসতে থাকেন। পরে অন্য জেলেরা তাঁদের দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
কোতোয়ালি নৌ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নাসিম আহমেদ জানান, খবর পেয়ে হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে, বাল্কহেডটি চিহ্নিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এদিকে স্থানীয়দের অভিযোগ, পদ্মায় দীর্ঘদিন ধরে একাধিক ড্রেজারের মাধ্যমে কবিরপুরসহ আশপাশের এলাকায় অবৈধভাবে বালু তুলে তা বাল্কহেডের মাধ্যমে নেওয়া হচ্ছে। ওই চক্র প্রভাবশালী হওয়ায় কেউ ভয়ে মুখ খুলতে পারেন না। রাত নামলেই পদ্মা নদীর দুর্গম এলাকাগুলোতে বাড়ে অবৈধ বালু উত্তোলন ও সেই বালু বহনকারী বাল্কহেডের দৌরাত্ম্য। বেপরোয়া বাল্কহেডের আঘাতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
আরেকটি সূত্র জানায়, সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বালুবাহী বাল্কহেডও এই রুট দিয়ে রাতে চলাচল করে। দূরের রুট হওয়ায় রাতে ওই বাল্কহেডগুলো অনিয়মতান্ত্রিকভাবে নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ ছাড়াই বেপরোয়াভাবে নদীতে চলাচল করছে। এসব অবৈধ বাল্কহেড চলাচল বন্ধের দাবি স্থানীয় মৎস্য আরোহণকারী ও নৌযান মালিকসহ স্থানীয়দের।
ফরিদপুর নৌ পুলিশের পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, অপরাধীদের দমনে নৌ পুলিশ সর্বদাই তৎপর রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘ জলসীমার অপরাধ নিয়ন্ত্রণে একটি স্পিডবোট ব্যবহার করতে হয়, এতে ফাঁকফোকর দিয়ে কখনো কখনো এমন ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে কিছুটা ব্যত্যয় ঘটে। তিনি নদীতে টহল বৃদ্ধি করে সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করা হবে বলে দাবি করেন।