নিয়মিতই রোববার সকালে ঢাকা থেকে কিশোরগঞ্জের ভৈরবে গিয়ে অফিস করতেন যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জালাল আহমেদ (৩০)। বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করে আবার ঢাকায় ফিরতেন পরিবারের কাছে।
আজ মঙ্গলবার পূজার ছুটি থাকায় গতকাল সোমবার অফিস শেষে ছুটে এসে কোনো রকমে উঠেছিলেন এগারসিন্দুর ট্রেনের শেষ বগিতে। কিন্তু এবার আর হাস্যোজ্জ্বল নয়, পরিবারে ফিরলেন লাশ হয়ে।
সোমবার বিকেল ৩টা ২০ মিনিটে কিশোরগঞ্জ থেকে যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে ভৈরব ছাড়ার সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এগারসিন্দুর ট্রেনটি। এতে নিহত হন ১৭ জন, আহত হন শতাধিক যাত্রী। আহতদের ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
নিহতদের মধ্যে একজন হলেন জালাল আহমেদ। ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় পরিবারসহ থাকতেন তিনি। জালার কুমিল্লা জেলার আব্দুর রহমানের ছেলে। দীর্ঘদিন যাবৎ ভৈরব উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা কার্যালয়ে ক্যাশিয়ারের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন তিনি।
জালালের পরিবার ও সহকর্মীদের সূত্রে জানা যায়, সোমবার অফিস শেষে সাড়ে ৩টার দিকে জালাল দৌড়ে ঢাকামুখী এগারসিন্দুর ট্রেনে ওঠেন। ট্রেনটি ছেড়ে যাওয়ার মুহূর্তেই ট্রেনটির শেষ দিকে কয়েকটি বগিতে সজোরে ধাক্কা দেয় আরেকটি কনটেইনার ট্রেন। এতে শেষের দুটি বগি রেললাইন থেকে ছিটকে পড়ে যায়।
নিহত জালালের সহকর্মী ভৈরব উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা জলি বদন তৈয়বা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘জালালের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লায় তবে তারা ঢাকায় সপরিবারে বসবাস করত। সে প্রতি রোববার অফিসে এসে বৃহস্পতিবার ঢাকায় চলে যেত। আজ (মঙ্গলবার) দুর্গাপূজার ছুটি থাকায় গতকাল সে দৌড়ে গিয়ে কোনো রকমে গাড়ির শেষের বগিতে উঠেছিল বলে জানতে পেরেছি। এর ঠিক ১০ মিনিট আগে তাঁর স্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছিল তার।’
তিনি আরও বলেন, ‘দুর্ঘটনায় খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তার মোবাইলে কল করে সেটি বন্ধ পায়। পরে তারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে পরিবারের লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ভৈরব হাসপাতালে যোগাযোগ করি। পরবর্তীতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হই।’
পরিবারের পক্ষে দুই ভাই ও তার স্ত্রীর অনুরোধে লাশ ময়নাতদন্ত ছাড়াই হস্তান্তর করা হয় বলেও জানান নিহতের সহকর্মী।