রাজধানীর মিরপুর বেড়িবাঁধ, শাহআলীসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘবদ্ধভাবে অস্ত্রের মুখে চাল, ডাল, তেল ও বিভিন্ন মালামালসহ ট্রাক, গাড়ি আটকে দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি ডাকাতদল ডাকাতি করে আসছে। প্রথমে লেজার লাইট দিয়ে গাড়ি থামাত। এরপর ড্রাইভারকে গাড়ি থেকে নামিয়ে বেঁধে পাশে ফেলে দিয়ে ট্রাক বা গাড়ি নিয়ে যায় তারা। তারপর সেই ট্রাক বা গাড়ি দিয়েই করা হতো পরবর্তী ডাকাতি।
আজ রোববার সকালে আন্তজেলা ডাকাত চক্রের অন্যতম হোতাসহ চার ডাকাতকে গ্রেপ্তারের পর এসব কথা জানিয়েছেন উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। রাজধানীর কাকরাইলের ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- মো. আসলামুল হক আসলাম (৩৫), মকবুল হোসেন প্রকাশ ওরফে মঙ্গল হোসেন বাবু (২৪), মো. রফিকুল ইসলাম (৩৫) ও মো. হাসান হাওলাদার (৩৭)। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, তিনটি ডাকাতি করা প্রাইভেটকার, ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি হাইয়েস মাইক্রোবাস, একটি লোহার তৈরি ছোরা, একটি লোহার তৈরি চাকু, দুটি লাঠি ও দুটি গামছা উদ্ধার করা হয়।
চার ডাকাতকে গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে হারুন অর রশীদ বলেন, ‘গতকাল শনিবার রাজধানীর শাহআলী থানা এলাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা তেজগাঁও বিভাগ বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে সংঘবদ্ধ আন্তজেলা ডাকাত দলের চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।’
ডিআইজি বলেন, ‘তারা রাতের বেলা বিভিন্ন খাদ্যশস্য, পণ্যের ট্রাক লেজার লাইট দিয়ে থামাতেন। তারপর ড্রাইভারকে নামিয়ে বেঁধে পাশে ফেলে ধান, চাল, ডাল, তেল, গরু, খাদ্যশস্য, মাছের খাবার ইত্যাদি লুট করে নিয়ে যেত।’
ডাকাত দলের প্রধান আসলামুল হক আসলাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসলামুল হক আসলাম বর্তমান সময়ের মোস্ট ওয়ান্টেড ডাকাত। তাকে অন্যান্য ডাকাতরা মাস্টার নামে ডাকে। আসলামের নেতৃত্বে তারা গাড়ি দিয়ে ডাকাতি করে।’
ইদানীং ডাকাতি বেড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, ‘করোনার সময় ডাকাতেরা সক্রিয় হয়ে উঠেছিল। বিভিন্ন জায়গায় বাসে যাত্রী বেশে ডাকাতি করত। অপরাধ প্রবণতা শেষ হবে না। তবে যেখানে যখনই ঘটনা ঘটছে ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
মোহাম্মদপুরে ওসির ওপর হামলা পুলিশের প্রতি জনগণের আস্থার অভাবের প্রতিফলন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালন করি। পুলিশের ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা আছে। পুলিশের ওপর কেউ হামলা করে না। দায়িত্ব পালনের সময় অনেকে পড়ে গিয়ে আহত হতে পারে বা ব্যথা পেতে পারে।’
গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে শাহআলী থানায় দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা।