ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর বায়ু দূষণ কমাতে ইটের ভাটা বন্ধ করতে হবে। ইটের ব্যবহার বাদ দিয়ে সিমেন্টের ব্লক ব্যবহার করতে হবে। আজ সোমবার রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাক সেন্টারে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) আয়োজিত ‘বায়ু ও প্লাস্টিক দূষণ হ্রাসের মাধ্যমে শহর সবুজায়ন’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ সব কথা বলেন তিনি।
মেয়র আতিক জানান, ঢাকা শহরের ৫৬ ভাগ বায়ু দূষণ হচ্ছে ইটের ভাটার কারণে। এ ছাড়া রাস্তার ধুলাবালির কারণে ১৮ ভাগ, যানবাহনের কারণে দূষণ হচ্ছে ১০ ভাগ।
পানি দূষণের বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, রাজধানীর গুলশান-বনানী লেক দূষণ করছেন এই এলাকার অভিজাত বাসিন্দারা। তাদের দূষণের কারণে গুলশান-বনানী লেকে মাছের চাষ করা যায় না, এখানে এখন মশার চাষ করা হচ্ছে। লেকের পানি দূষণ কমাতে বাসার পয়োবর্জ্য ড্রেনে ফেলা যাবে না। নিজের বাসায় সেপটিক ট্যাংক বসাতে হবে।
সেমিনারে বক্তারা জানান, ২০ বছরে বায়ুদূষণজনিত রোগ বালাইয়ের কারণে মৃত্যু ৯ শতাংশ বেড়েছে। বায়ুদূষণে প্রতিবছর মারা যাচ্ছে প্রায় দুই লাখ মানুষ। ১৫ বছরে প্লাস্টিক দূষণও বেড়েছে দ্বিগুণ। এর ফলে ভয়াবহ স্বাস্থ্যগত ক্ষতির শিকার হচ্ছে শহরাঞ্চলের মানুষ।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন জানান, তার সংস্থা পরিবেশ দূষণ বন্ধে প্লাস্টিক ব্যবহার কমানোর প্রতি মনোনিবেশ করছে ৷ তারা ইতিমধ্যেই প্লাস্টিক ফাইলের পরিবর্তে কাগজের তৈরি ফাইল এবং প্লাস্টিক ব্যানারের পরিবর্তে কাপড়ের তৈরি ব্যানার ব্যবহার শুরু করেছে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, পরিবেশ দূষণ কমাতে বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহার করা উচিত। কিন্তু আমাদের দেশে বিআরটিএ এখন পর্যন্ত বৈদ্যুতিক গাড়ির নিবন্ধন দিচ্ছে না। এটা সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক লিয়াকত আলী জানান, ১ নভেম্বর থেকে তাদের প্রতিষ্ঠান পিভিসি ব্যানার এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক প্রচারসামগ্রী ব্যবহার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আলোচকেরা বলেন, সরকার পরিবেশ দূষণ বন্ধে বিভিন্ন নীতি গ্রহণ করেছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন নেই। পরিবেশ দূষণ বন্ধে সঠিক নীতি গ্রহণ, জনসচেতনতা এবং সরকারের শক্ত অবস্থানের ওপর জোর দেন বক্তারা।