কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে এশিয়াটিক প্রজাতির একটি সিংহীর মৃত্যু হয়েছে। আজ সকাল ৬টায় সিংহী নদীকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান সিংহ বেষ্টনীর দায়িত্বে থাকা কর্মীরা। বিষয়টি নিশ্চিত করেন পার্কের তত্ত্বাবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম।
পার্ক কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা যায়, পার্ক কর্তৃপক্ষ মারা যাওয়া সিংহীর নাম রেখেছিল নদী। প্রায় দুই মাস আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে নদীর সঙ্গী সোহেল বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হয়ে মারা যায়। সোহেল মারা যাওয়ার পর বেষ্টনীর একটি কক্ষে নদীর সঙ্গে থাকত সম্রাট।
গত ২ মার্চ নদী ও সম্রাটের মধ্যে প্রথম মারামারি হয়। এদিন একে অপরকে কামড় দেয়। চিকিৎসায় দুজনই মোটামুটি সুস্থ হয়ে উঠেছিল। দুজনকে আবারও বেষ্টনীর এক কক্ষে রাখা হয়। ২৫ দিন পর গত ২৭ মার্চ ফের আবারও পরস্পরে কামড়াকামড়িতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় নদীর পেট ও গলায় কামড় বসিয়ে দেয় সম্রাট। এতে রক্তাক্ত অবস্থায় নদীকে আলাদা কক্ষে রেখে চিকিৎসা করা হয়। নদীর অবস্থার অবনতি দেখা দিলে দুটি মেডিকেল বোর্ড বসায় পার্ক কর্তৃপক্ষ। এ সময় চিকিৎসকেরা নদীর আশা ছেড়ে দেন।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০০৪ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার মিরপুরে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে চার বছর বয়সী সোহেলকে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কে আনা হয়। প্রথম দিকে সোহেলের সংসারে ছিল হীরা। সেই সংসারে রাসেল জন্মেছি। সেই রাসেলকে রেখে বেষ্টনীতে মারা যায় হীরা।
এরপর এই বেষ্টনীতে মারা যাওয়া সোহেল ও নদীর সংসার ছিল ১১ বছর। সোহেল ও নদীর সংসারে রয়েছে দুই সন্তান টুম্পা ও সম্রাট। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে নদী, টুম্পা, সম্রাট ও রাসেলকে রেখে পৃথিবী থেকে বিদায় নেয় সোহেল। পার্কের ৭৫ একরের সিংহ বেষ্টনীতে এখন সিংহ আছে তিনটি—রাসেল, টুম্পা ও সম্রাট।
এ বিষয়ে ডুলাহাজারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তত্ত্বাবধায়ক) মো. মাজহারুল ইসলাম বলেন, ‘নদীকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেওয়া হয়েছিল। সব চেষ্টার পরও তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। সিংহী মৃত্যুর বিষয়ে চকরিয়া থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। চকরিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সুপন নন্দী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের ভেটেরিনারি চিকিৎসক হাতেম সাজ্জাত মো. জুলকার নাইন সিংহী নদীর মরদেহের ময়নাতদন্ত করেছেন। ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করার পর সিংহীর মরদেহ মাটিচাপা দেওয়া হয়।’