চট্টগ্রাম নগরে ডবলমুরিং এলাকায় ৬ বছর আগে ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন সুলতান হত্যার ঘটনায় দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর দুই আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার চট্টগ্রামে চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ শরীফুল আলম ভুঁইঞা এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—কামাল হোসেন ও মো. রাসেল। আর যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন লিলু আক্তার রিনা ও সুরমা আক্তার। এদের মধ্যে কামাল হোসেনের স্ত্রী লিলু আক্তার পলাতক রয়েছেন। বাকি তিন আসামি রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন।
২০১৬ সালের ১৯ নভেম্বর ডবলমুরিং থানার সিডিএ আবাসিক এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সুলতানকে শারীরিক নির্যাতন ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়। পরে তাঁর মরদেহ বস্তাবন্দী করে বাংলাদেশ ব্যাংক কলোনির একটি নালার পাশে ফেলে দেওয়া হয়। এই ঘটনায় নিহতের ছেলে ইমাজ উদ্দিন সুলতান ফরহাদ বাদী হয়ে পরদিন ২০ নভেম্বর অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডবলমুরিং থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
চতুর্থ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের অতিরিক্ত পিপি নোমান চৌধুরী বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আসামিরা সবাই ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই মামলায় ৩২ জন সাক্ষীর মধ্যে ২২ জন সাক্ষী উপস্থাপন করেছে। অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় দুজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি লাশ গুমের অভিযোগে আসামিদের প্রত্যেককে ২০১ ধারায় ৫ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। দুই আসামি নারী হওয়ায় বিচারক তাঁদের মৃত্যুদণ্ডের বদলে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬ সালে ২৮ মে চারজনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি কামাল হোসেনের সঙ্গে জালাল উদ্দিনের দীর্ঘদিনের পরিচয় ছিল। সেই সূত্রে হত্যাকাণ্ডের দিন কামাল ফোন করে জালাল উদ্দিনকে মাদারবাড়ির ২ নম্বর রোডে নিজের বাসায় ডেকে নেন। সেখানে জালাল উদ্দিন আসামি সুরমা আক্তারের সঙ্গে কিছু অন্তরঙ্গ সময় কাটায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে এই ঘটনাকে পুঁজি করে কামাল হোসেন টাকা দাবি করে। পরে ভবিষ্যতে ক্ষতি হতে পারে এই আশঙ্কায় আসামিরা জালাল উদ্দিনকে শ্বাস রোধ ও আঘাত করে হত্যা করেন।