এশিয়ার বৃহত্তম প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে ডিম ছাড়ার মুহূর্তে আবারও পেটে ডিমসহ মা মাছ মাছের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে হালদা নদীর রাউজান অংশের আজিমের ঘাট এলাকায় মৃত মৃগেল মাছটি উদ্ধার করে স্থানীয় কয়েকজন ডিম সংগ্রহকারী। মাছটির ওজন ৫ কেজি ১০০ গ্রাম। দৈর্ঘ্য ২ ফুট ৬ ইঞ্চি, প্রস্থ ৫ ইঞ্চি।
হালদা নদীর ডিম সংগ্রহকারী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. রোশাঙ্গীর আলম বলেন, ‘সকালে মৃগেল মা মাছটি ভেসে যেতে দেখে আমরা উদ্ধার করি। এর পেটে তাজা ডিম রয়েছে। দেখে মনে হচ্ছে, মাছটি গতকালই মারা গেছে। মাথায় আঘাতের চিহ্ন আছে। ধারণা করছি, ড্রেজারের আঘাতে মৃগেল মা মাছের মৃত্যু হয়েছে।’
এদিকে হালদায় মা মাছের প্রজনন সময়ে মা মাছ মারা যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ডিম সংগ্রহকারীরা। তাঁরা বলছেন, ডিম ছাড়ার এই সময়ে একটি মা মাছ মারা যাওয়া হালদার জন্য ভালো লক্ষণ নয়। তাই হালদার প্রতি প্রশাসনের নজরদারি বাড়াতে হবে।
এ বিষয়ে রাউজান উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন আজাদী বলেন, ‘আঘাতের কারণে মাছটির মৃত্যু হয়েছে। মাছের পেটে ডিম ছিল। হয়তো কেউ ধরতে গিয়ে মাছটিকে আঘাত করেছে। পরিবেশ সুরক্ষায় মা মাছটি মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। সব সময় তো পাহারা দেওয়া সম্ভব না। তাই নিজেদেরও সজাগ হতে হবে।’
হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের জীববিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্তমানে হালদা নদীতে চলছে কার্পজাতীয় মা মাছের প্রজনন মৌসুম। প্রজননের এই ভরা মৌসুমে হালদা নদী থেকে মৃত মৃগেল মা মাছ উদ্ধার করা হলো। এর আগেও চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে পাঁচ কেজি ওজনের একটি মৃত কাতলা মা মাছ উদ্ধার করা হয়েছিল। প্রজননের এই সময়ে মা মাছের মৃত্যু খুবই উদ্বেগজনক। কার্পজাতীয় মা মাছ যেন নিরাপদে ডিম ছাড়তে পারে তাই অসাধু মৎস্যশিকারি থেকে মা মাছ রক্ষা, ইঞ্জিনচালিত নৌযান বন্ধ ও দূষণের থেকে হালদা নদীর জলজ বাস্তুতন্ত্রকে স্বাভাবিক রাখতে হালদা ও শাখা খালগুলোতে প্রশাসনিকভাবে নিয়মিত অভিযান ও স্থানীয়ভাবে নজরদারি বৃদ্ধি করতে হবে।’