নীতিমালা ভেঙে দরপত্র ছাড়াই ভাড়া দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের ২৪ শতাংশ জমি। এমনকি আমদানিকারকদের এই জমি ভাড়া দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়েছে খাতুনগঞ্জের দুই ব্যবসায়ীকে। যাঁরা আমদানিকারক নন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বন্দরের বোর্ড সভার অ্যাজেন্ডার সারসংক্ষেপের নথি (নথি নম্বর ১৮.১৩.০০০০.৫০০.৩৫.০২২.২৫) থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, চট্টগ্রাম নগরের সুজা কাঠগড় মৌজার ২৪ শতক (১০ হাজার ৪৫৫ বর্গফুট) জমি খাতুনগঞ্জের মেসার্স পূবালী ট্রেডার্স ও মেসার্স রহমান ট্রেডিংয়ের অনুকূলে বরাদ্দ (ভাড়া) দেওয়া হয়। বন্দরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, বিশেষ প্রভাবে দ্রুততার সঙ্গে এই জমি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।
বন্দর থেকে প্রাপ্ত তথ্যমতে, দেশে পাইকারি নিত্যপণ্যের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত খাতুনগঞ্জের চাক্তাই খালের নিকটবর্তী এই জমি কোনো ধরনের দরপত্র ছাড়াই ভাড়া দেয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ী মেসার্স পূবালী ট্রেডার্সের মালিক সুব্রত মহাজন ও মেসার্স রহমান ট্রেডিংয়ের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান ওই জমি বরাদ্দ পেতে আবেদন করেন। গত ৭ অক্টোবর অস্থায়ী ভিত্তিতে জমিটি ৬ মাসের জন্য বরাদ্দ দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর বন্দরের ১৯৬৭০ নম্বর বোর্ড সভায় দরপত্র ছাড়াই ওই ব্যবসায়ীদের এই জমি বরাদ্দ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
৯ অক্টোবর এই জমির দখল বুঝিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। এরপর ১৬ নভেম্বর ওই জমিতে অস্থায়ী টিনশেড ঘর তৈরির অনুমতিও দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ।
বন্দরসংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, দ্রুততার সঙ্গে জায়গাটি বরাদ্দ দেওয়ার সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে।
বন্দরের ভূমিব্যবস্থাপনা নীতিমালা ১৯৯৮-এর-৬ বিধিতে দরপত্র ছাড়া কোনো ভূমি ইজারা, ভাড়া প্রদান করা যাবে না বলে উল্লেখ রয়েছে। তবে আমদানি-রপ্তানি পণ্য মজুতের জন্য ৬ মাসের ভাড়া দেওয়ার বিধান রাখা হয়।
এ বিষয়ে পূবালী ট্রেডার্সের মালিক সুব্রত মহাজন বলেন, ‘বন্দর থেকে এই জায়গা আমি বরাদ্দ পেয়েছি। আমার অংশ ইতিমধ্যে রহমান ট্রেডিংয়ের মালিক মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে বিক্রি করে দিয়েছি।’
মোস্তাফিজুর রহমান নিজের নামে বরাদ্দ ও সুব্রত মহাজনের নামে বরাদ্দ জমি কেনার কথা স্বীকার করেন।
বন্দরের সচিব ও মুখপাত্র ওমর ফারুক বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি, অনিয়ম হলে তাঁদের বরাদ্দ বাতিল করা হবে। তবে তাঁদের ৬ মাসের জন্য জায়গাটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে।’