হোম > সারা দেশ > কক্সবাজার

ঘূর্ণিঝড় মোখা: টেকনাফজুড়ে পানির সংকট

জমির উদ্দিন, টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ থেকে

ঘূর্ণিঝড় মোখার আঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ ও সেন্টমার্টিনে ৯০ ভাগ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে গিয়ে তার ছিঁড়ে নিচে পড়েছে। এতে গত দুদিন ধরে বিদ্যুৎহীন এই উপজেলা। ফলে দেখা দিয়েছে খাবার তীব্র পানি সংকট। এক-দুই কিলোমিটার দূর থেকে পানি এনে কোনোরকম পানির তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন এই উপজেলার মানুষ।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টেকনাফে একটি পৌরসভা ও ৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। সেগুলো হলো—হোয়াইক্যং, হ্নীলা টেকনাফ সদর, সাবরাং, বাহারছড়া ও সেন্টমার্টিন। এই সব ইউনিয়নে বসবাস করেন অন্তত ৪ লাখ মানুষ। ঘূর্ণিঝড় মোখার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেন্টমার্টিন, সাবরাং ও বাহাড়ছড়া। এর মধ্যে সাবরাং ইউনিয়নের  শাহপরীর দ্বীপের প্রায় ৯০ ভাগ ঘরবাড়ি ভেঙে গেছে। এই দ্বীপে বসবাস করেন প্রায় ৫০-৬০ হাজার মানুষ।

শাহপরীর দ্বীপের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ২ হাজার পরিবার বসবাস করেন। ঘূর্ণিঝড়ে এই ওয়ার্ডটি একেবারে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। এখানে সবচেয়ে বেশি খাবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। শাহপরীর দ্বীপের বেড়িবাঁধ এলাকায় খাবারের দোকানদার আব্দুর রশিদ। তিনি ভ্যানগাড়ি করে দুই কিলোমিটার দূরের একটি টিউবওয়েল থেকে পানি আনেন।

আব্দুর রশিদ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার কারণে দুদিন বিদ্যুৎ নেই। ফলে অনেকে পানি তুলতে পারছে না। সাবরাং ইউনিয়নে ডিপ টিউবওয়েলের সংখ্যাও কম। ফলে পানি আনতে এক-দুই কিলোমিটার দূরে যেতে হয়। টেকনাফ উপজেলাটি সাগর ঘেঁষা হওয়ায় যেখানে-সেখানে পানি উঠে না। অনেক জায়গায় পানি উঠলেও তা লবণাক্ত।

শাহপরীর দ্বীপের বেড়িবাঁধ সংলগ্ন ছোট ঘরটি ঘূর্ণিঝড়ে উড়ে নিয়ে গেছে ফাতেমা নামের স্থানীয় এক নারী ঘর। খোলা আকাশের নিচে চার ছেলে সন্তান নিয়ে আছেন তিনি। দুদিন কলা, মুড়ি খেয়ে দিনযাপন করছেন। ছেলে-মেয়েদের পাশের এক প্রতিবেশীর কাছে রেখে দুই কিলোমিটার দূর থেকে পানি আনেন ফাতেমা। 

জানতে চাইলে ফাতেমা বলেন, বেড়িবাঁধ থেকে দুই কিলোমিটার দূরে একটি ডিপ টিউবওয়েল থেকে ১০ লিটার পানি এনেছি। দীর্ঘ লাইন ঠেলে দুই ঘণ্টা অপেক্ষা করে পানি আনতে হয়েছে। এখন খাবার বলতে শুকনা খাবার আর পানি। প্রশাসনের কেউ এখনো পর্যন্ত সহযোগিতা করতে আসেনি বলে দাবি করেন ফাতেমা।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড়ে ১২০০ ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রায় হাজারো পরিবার এখন ঘরহীন। এখানেও পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান জানান, বিকেল ৩টার দিকে মোখার মূল তাণ্ডব শুরু হয়। এতে এই দ্বীপে বেড়ার তৈরি ৭০০টি ও টিনশেডের ২৫০টি ঘর বাতাসে উড়ে যায়। দোকানপাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১০০ টির মতো। বিভিন্ন দোকানের অনেক মালামাল নষ্ট হয়েছে। পুরো সেন্টমার্টিনে ৩ হাজারের মতো গাছ ভেঙে পড়েছে। বিদ্যুৎ না থাকায় পানির সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। 

পানির সংকটের বিষয়টি স্বীকার করে টেকনাফ উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল আলম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘টেকনাফজুড়ে এমনিতে পানির সংকট। ঘূর্ণিঝড় হওয়ায় এই সংকট আরও বেড়েছে। আরও দুদিন লাগবে বিদ্যুৎ আসতে। বিদ্যুৎ আসলে এই সংকট কেটে যাবে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত সবাই সরকারের সহযোগিতা পাবেন। আমাদের ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের তালিকা করছেন।’

লাঠিতে ভর দিয়ে করতে হয় যাতায়াত, একই পরিবারে ছয় প্রতিবন্ধীর মানবেতর জীবন

চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের হার ২৯ শতাংশ বৃদ্ধি, অর্ধেকই পথচারী

ভবন পরিকল্পনা অনুমোদনে ঘুষ দাবি, সিডিএ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

ফটিকছড়িতে ইজিবাইক উল্টে নারী নিহত

বসতঘরে আগুনে প্রাণ গেল দাদি-নাতনির

লক্ষ্মীপুরে বিএনপি নেতার ঘরে তালা লাগিয়ে অগ্নিসংযোগ: চার দিন পর হত্যা মামলা

চট্টগ্রামের ১৬ আসনের ৭টিতে বিএনপির চ্যালেঞ্জ বিএনপিই

চুরির স্বর্ণালংকার বিক্রির টাকায় রয়েল এনফিল্ড মোটরসাইকেল, গ্রেপ্তার ৪

হাতিয়ায় চর দখল নিয়ে দুই গ্রুপের সংঘর্ষ-গোলাগুলি, নিহত ৫

চালককে শ্বাসরোধ করে অটোরিকশা ছিনতাইয়ের চেষ্টা, পটিয়ায় জনতার হাতে যুবক আটক