হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামে নির্বাচনী লড়াই: রক্তাক্ত রাউজানে গিয়াসই প্রার্থী

সবুর শুভ, চট্টগ্রাম    

(ওপরে বাঁ থেকে) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, আবু সুফিয়ান, (নিচে বাঁ থেকে) মোস্তফা কামাল পাশা ও নাজমুল মোস্তফা আমিন।

দলীয় অন্তঃকোন্দলে ‘রক্তাক্ত জনপদে’ পরিণত হওয়া চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান (পদ স্থগিত) গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকেই প্রার্থী হিসেবে বেছে নিয়েছে বিএনপি। গত বৃহস্পতিবার ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁকে এই আসনে প্রার্থী করায় দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন।

অন্যদিকে মনোনয়ন না-পাওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য গোলাম আকবর খোন্দকার ও তাঁর সমর্থকেরা হতাশ হয়েছেন। তবে তাঁরা কেউ এ বিষয়ে মুখ খুলছেন না।

গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর সমর্থক রাউজান উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হুদা বলেন, ‘গিয়াস কাদের চৌধুরী দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত নেতা। অনেক নির্যাতন-নিপীড়নের পরও তিনি দলের একনিষ্ঠ সৈনিক হিসেবে মাঠে ছিলেন। দল তাঁকে মূল্যায়ন করায় আমরা খুশি।’

এদিকে প্রথম দফায় বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণায় বাদ পড়া দলের আরেক নেতা ও মনোনয়নপ্রত্যাশী আবু সুফিয়ানও নির্বাচনী লড়াইয়ে ফিরেছেন। চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে নগর বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানকে প্রার্থী করা হয়েছে। বিএনপির জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ হিসেবে বিবেচিত চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে নবীন মুখ নাজমুল মোস্তফা আমিনকে বেছে নিয়েছে দলটি। চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে সাবেক সংসদ সদস্য মোস্তফা কামাল পাশায় আস্থা রেখেছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার বিএনপির পক্ষ থেকে ৩৬টি নির্বাচনী আসনে দলের মনোনীত প্রার্থী ঘোষণা করা হয়; যেখানে চট্টগ্রামেরও চারটি আসন রয়েছে।

গত ৩ নভেম্বর প্রথম দফায় ২৩৭ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেছিল বিএনপি। চট্টগ্রামের মোট ১৬ আসনের মধ্যে প্রথম দফায় ১১টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে পরে আবু সুফিয়ানের নাম প্রত্যাহার করা হয়। দ্বিতীয় দফায় প্রত্যাহার হওয়া ওই আসনসহ চারটিতে প্রার্থী ঘোষণা করা হলো। এরপরও আরও দুটি আসনের নেতা-কর্মীদের তাঁদের প্রার্থীর নাম জানতে অপেক্ষার প্রহর আরও বাড়ল। আসন দুটি হলো চট্টগ্রাম-১৪ (চন্দনাইশ) ও চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা)।

ঘোষিত চার আসনের মধ্যে চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি-বাকলিয়া) আসনে আবু সুফিয়ান, চট্টগ্রাম-৬ (রাউজান) আসনে গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৩ (সন্দ্বীপ) আসনে মোস্তফা কামাল পাশা এবং চট্টগ্রাম-১৫ (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) আসনে নাজমুল মোস্তফা আমিনকে প্রার্থী করা হয়েছে। ছাত্রদলের রাজনীতি থেকে উঠে আসা আবু সুফিয়ান চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি দক্ষিণ জেলার আহ্বায়কেরও দায়িত্ব পালন করেছেন।

এদিকে চট্টগ্রামের আরেক আলোচিত আসন রাউজানে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন দুই হেভিওয়েট নেতা গোলাম আকবর খোন্দকার ও গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরী। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিএনপি নেতা-কর্মীরা রাউজানে ফেরেন। তবে এলাকায় ফিরে নেতা-কর্মীরা গোলাম আকবর ও গিয়াস কাদের–এই দুই পক্ষে বিভক্ত হয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘাতে রক্তাক্ত জনপদে পরিণত হয় রাউজান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ মাসে রাউজানে অন্তত ১৭ জন খুন হয়েছেন। এর মধ্যে ১২ জনই খুন হয়েছেন বিএনপির দুই গ্রুপের অন্তর্দ্বন্দ্বের কারণে।

থানা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৯ জুলাই রাউজানে প্রয়াত নেতা সাবেক মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের কবর জিয়ারত করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলার শিকার হন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা বিএনপির তৎকালীন আহ্বায়ক ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার। এ ঘটনার পর গিয়াস কাদের কেন্দ্রীয় সহসভাপতির পদ হারান গত ৩০ জুলাই। একই সময় গোলাম আকবরের নেতৃত্বাধীন উত্তর জেলার আহ্বায়ক কমিটিও বিলুপ্ত করা হয়।

রাউজানের পাশের আসন রাঙ্গুনিয়ায় মনোনয়ন পেয়ে ইতিমধ্যে নির্বাচনের মাঠে নেমে পড়েছেন গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীর ভাতিজা, প্রয়াত সালাহউদ্দিন কাদেরের ছেলে হুম্মাম কাদের চৌধুরী। এদিকে সন্দ্বীপ আসনে আবারও মনোনয়ন পেয়েছেন মোস্তফা কামাল পাশা। যিনি আগেও দুই দফায় সেখান থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনে মনোনয়ন পাওয়া নাজমুল মোস্তফা আমিন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য ও লোহাগাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক। তিনি নবাগত প্রার্থী। ওই আসনে তাঁকে জামায়াতে ইসলামীর হেভিওয়েট প্রার্থী সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরীকে নির্বাচনের মাঠে মোকাবিলা করতে হবে।

প্রথম দফায় চট্টগ্রামের ১০টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া প্রার্থীরা হলেন, চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে নুরুল আমিন, চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) আসনে সরওয়ার আলমগীর, চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে কাজী সালাউদ্দিন, চট্টগ্রাম-৫ (হাটহাজারী) আসনে মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম-৭ (রাঙ্গুনিয়া) আসনে হুম্মাম কাদের চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৮ (চান্দগাঁও-বোয়ালখালী) আসনে এরশাদ উল্লাহ, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং- হালিশহর) আসনে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আসনে এনামুল হক এনাম, চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসনে সরওয়ার জামাল নিজাম এবং চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনে সাবেক মন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা।

মনোনয়নের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘দলের কঠিন সময়ে মাঠে ছিলাম। দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব আমার কর্মকাণ্ডের মূল্যায়ন করেছে।’

চট্টগ্রামের আনোয়ারা: মেডিকেল বর্জ্য খালে বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকি

সীতাকুণ্ডে বালু উত্তোলনে ব্যবহৃত ড্রেজার ও বাল্কহেড পুড়িয়ে দিল বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী

দাবি পূরণে প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট হবে: ৮ দলের সমাবেশে জামায়াত আমির

কর্ণফুলীতে অস্ত্রসহ যুবক আটক

বাসার দরজা ভেঙে চবি শিক্ষার্থীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

একমঞ্চে ৬১ চিকিৎসা গবেষণাপত্র উপস্থাপন

চবির শাটলে বসা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডা, শিক্ষার্থীকে মারধর

রাউজানে ৪টি ইটভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রশাসন

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তার গাড়িতে হামলা, একজন বলছিলেন—‘গুলি কর’

পার্বত্য চুক্তির বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে গ্রেপ্তার আইনজীবী জামিনে মুক্ত