ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আজ সোমবার সকাল থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। আকাশে ঘন কালো মেঘ। দিনভর বৃষ্টির সঙ্গে দমকা হাওয়া বয়েছে। বৃষ্টি ও ঝোড়ো হওয়া চলছেই। এরই মধ্যে বরিশালে বিদ্যুৎ বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। আজ দিনভর বিদ্যুৎ বিভ্রাট চলেছে। বিশেষ করে জেলার হিজলা, মুলাদী, উজিরপুর, বাবুগঞ্জ ২৪ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন।
উপকূলীয় এলাকার বাসিন্দাদের আজ দুপুর থেকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেওয়া শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। ভারী বৃষ্টির কারণে পানিতে তলিয়ে গেছে বরিশাল নগরের বেশির ভাগ এলাকা।
এদিকে দিনভর ভারী বৃষ্টিপাতে দক্ষিণাঞ্চলের বড় নদ নদীগুলোর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বরিশাল-ঢাকাসহ সব নৌপথে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসান সাংবাদিকদের বলেছেন, ছয় জেলায় ৩ হাজার ৯৭৪টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
আজ দুপুরের মধ্যে বরিশাল নগরের অধিকাংশ সড়ক পানিতে ডুবে গেছে। ফলে যান চলাচল ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। অনেকটা পানিবন্দী হয়ে পড়েছে নগরবাসী। বিশেষে করে নবগ্রাম রোড, সদর রোড, বগুড়া রোড, কলেজ রোড, সার্কুলার রোড, জিয়ানগর, রূপাতলী হাউজিং পানিতে থই থই করছে। একই অবস্থা জেলার হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ, মুলাদীতে। এসব এলাকার নিম্নাঞ্চল ডুবে যাওয়ায় দুর্ভোগে আছেন সাধারণ মানুষ।
বরিশালের নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে সকাল থেকে ঢাকা-বরিশালসহ সব রুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ করা হয়েছে।’ বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের গেজ রিডার আব্দুর রহমান বলেন, ‘সোমবার সকালে কীর্তনখোলাসহ সব নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে।’
এর আগে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জানানো হয়েছে, ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত আছে, যেখানে প্রায় ২ লাখ ৬৯ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে। শুকনো খাবার, সুপেয় পানি, মোমবাতি, ওষুধপত্রের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতায় প্রয়োজনীয় যানবাহন, সরঞ্জামাদিসহ প্রতিটি ইউনিয়নে একটি করে মেডিকেল টিমের প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলার সব স্থানে মাইকিং করা হচ্ছে। গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।