বঙ্গোপসাগর থেকে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে গভীর সমুদ্রসহ সংশ্লিষ্ট নদ-নদী উত্তাল রয়েছে। এর মধ্যে বরগুনার পাথরঘাটায় এখনো নিরাপদ আশ্রয় ফেরেনি প্রায় দুই শতাধিক মাছধরা ট্রলার। কয়েক শতাধিক মাছধরা ট্রলার বিষখালী, বলেশ্বর এবং সুন্দরবনের বিভিন্ন খালে আশ্রয় নিয়েছে।
তবে কিছু ট্রলার উপকূলের দিকে রওনা হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেলেও অধিকাংশ মাছধরা ট্রলারের জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী।
এ দিকে ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবিলায় উপকূলীয় বরগুনায় তিনটি মুজিব কেল্লা ও ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।
আবহাওয়া অফিস বলছে, মোখার প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় বেশ কয়েক দিন থেকেই প্রচণ্ড দাবদাহ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে এবং গভীর সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বরগুনা জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী আজকের পত্রিকাকে জানান, ‘গভীর সমুদ্র উত্তাল থাকায় বৃহস্পতিবার বেশ কিছু ট্রলার নিরাপদে ঘাটে আসতে পেরেছে। নেটওয়ার্কের বাইরে থাকা জেলেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। যারা গভীর সমুদ্র থেকে ফিরেছে, তারা অনেকেই বিষখালী, বলেশ্বর ও সুন্দরবনসহ বিভিন্ন খালে নিরাপদে আশ্রয়ে নিয়েছে।’
ফিরে আসা জেলেদের বরাত দিয়ে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ধারণা করা হচ্ছে দুই শতাধিক ট্রলার এখনো গভীর সমুদ্রে অবস্থান করছে। তাদের ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন মাধ্যমে যোগাযোগ করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ধরনের দুর্ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি।
বরগুনা জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মিটিং করে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। অর্থ, টিন, চাল, শুকনো খাবারসহ বরগুনায় তিনটি মুজিব কেল্লা, ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষে অর্ধশতাধিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।’
সেই সঙ্গে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকার জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। সব সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রস্তুত রয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।