বরিশাল জেলার গৌরনদী উপজেলার সরিকল ইউনিয়নের শাহজিরা গ্রামের মৃত জয়নাল হাওলাদারের ছেলে শিপন হাওলাদার (৪৫)। সংসারে সচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে ব্রুনেইয়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন। চার মাস ধরে পড়ে সেই দেশের হাসপাতালের হিমঘরে পড়ে আছে শিপনের মরদেহ। অর্থাভাবে মরদেহ দেশে আনতে পারছে না পরিবার।
শিপন হাওলাদারের স্ত্রী খোরশেদা বেগম বলেন, আমাদের সংসারে আর্থিক সমস্যায় দিন কাটাইতেছিলাম। তাই সংসারে সচ্ছলতা আনতে দুই বছর আগে এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে এবং ধার দেনা করে ব্রুনেইতে যান শিপন। সেখানে ঘাস কাটার কাজ করতেন। কিন্তু কিছুদিন পরেই স্ট্রোক করলে ব্রুনেইয়ের রিফাজ হাসপাতালে তাঁকে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসার জন্য টাকা চাইলে আবার ঋণ করে ভাগনে ব্রুনেই প্রবাসী লালনের কাছে বাংলাদেশ থেকে দেড় লাখ টাকা পাঠানো হয়। চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিপন মারা যান। চার মাস ধরে হাসপাতালের হিমঘরে তার লাশ পড়ে আছে।
শিপনের স্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদেরকেই লাখ লাখ টাকা দেনার মধ্যে রেখে গেছেন। এখন আবার নতুন করে টাকা খরচ করে আনার মতো সামর্থ্য নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, এমপি মহোদয় ও প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ, আমার স্বামীর লাশটা দেশে এনে আমার পরিবারকে দেখার সুযোগ করে দেন।’
শিপন হাওলাদারের মেয়ে মীম আক্তার বলেন, ‘আমার বাবা আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে গেছে। তাকে তো আর বাবা বলে ডাকতে পারব না। আমার বাবার লাশটা বিদেশ থেকে এনে যদি দেশের মাটিতে দাফন করা হয়। তাহলে বাবাকে শেষবারের মতো একবার দেখতে পারব এবং তার কবরটা দেখে মনে করব আমার বাবা ওইখানে শুয়ে আছে। তাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ, আমার বাবার লাশটা দেশে ফেরত আনতে চাই আমরা, দেখতে চাই। আমাদের সেরকম কোনো সামর্থ্য নাই যে টাকা খরচ করে তার লাশটা দেশে আনব।’